বাংলাদেশ ব্যাংক বড়দের পাশাপাশি স্কুলশিক্ষার্থীরাও এখন ব্যাংকে টাকা জমা রাখে। বর্তমানে ১৫ লাখ ৩৯ হাজার ৮শ’৩৬ জন শিক্ষার্থীর টাকা জমা রয়েছে ব্যাংকে। এ বছরের জুন পর্যন্ত সময়ের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মার্চে বিভিন্ন ব্যাংকে স্কুলের ১৪ লাখ ৬১ হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থীর অ্যাকাউন্ট ছিল। তিন মাসে তাদের অ্যাকাউন্ট বেড়েছে প্রায় একলাখ। জুন পর্যন্ত স্কুলশিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ব্যাংকে একহাজার ৪১৯ কোটি টাকা জমিয়েছে। মার্চে শিক্ষার্থীদের জমানো টাকার পরিমাণ ছিল একহাজার ৪৪১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের ব্যাংকে শিক্ষার্থীদের হিসাব ও টাকা জমার পরিমাণ অনেক কম। ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরো পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড.আতিউর রহমান ২০১০ সালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে ‘স্কুল ব্যাংকিং’ কার্যক্রমের উদ্যোগ নেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘পুরো জাতির সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলাই ছিল মূল লক্ষ্য। বিশেষ করে, স্কুলশিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে ২০১০ সালে আমরা স্কুল ব্যাংকিং প্রকল্প হাতে নিয়েছিলাম। এখন ১৫ লাখেরও বেশি স্কুলশিক্ষার্থী ব্যাংকে টাকা জমা রাখছে।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালের ২ নভেম্বর স্কুল ব্যাংকিং বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। এরপর থেকেই স্কুল পড়ুয়াদের সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আকর্ষণীয় মুনাফার নানা স্কিম চালু করে। প্রথম বছরে (২০১১ সালে) স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলা হয় ২৯ হাজার ৮০টি। ওই বছর বিভিন্ন স্কুলশিক্ষার্থীরা দেশের ব্যাংকগুলোতে ৩০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আমানত রাখে। শুরুতে ১০ টাকা দিয়ে হিসাব খোলা হলেও পরে হিসাব খুলতে ১ শ’ টাকা জমা রাখতে বলা হয়। এসব হিসাব সাধারণ চলতি হিসাবে রূপান্তরের সুযোগও আছে।
১১ থেকে ১৮ বছর বয়সী ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা তাদের বাবা-মা অথবা বৈধ অভিভাবকের সঙ্গে যৌথ নামে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। মাত্র ১
শ’ টাকা প্রাথমিক জমা দিয়ে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্যাংকের শাখায় এ হিসাব খোলা যায়। এ হিসাবে কোনও ফি বা চার্জ আরোপ করা হয় না। এমনকি ন্যূনতম স্থিতি রাখার বাধ্যবাধকতাও নেই।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলের ব্যাংক শাখার মাধ্যমে খোলা স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের তুলনায় শহরাঞ্চলের ব্যাংক শাখার মাধ্যমে খোলা স্কুল ব্যাকিং হিসাবের সংখ্যা প্রায় ৫৭.৭৩ শতাংশ বেশি।
ব্যাংকে জমার ক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলের জমার পরিমাণ প্রায় ২ দশমিক ৩১ বেশি। এ বছরের জুন পর্যন্ত ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৭৯৩ জন স্কুলছাত্র তাদের ব্যাংক হিসাবে ৭৭৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা জমিয়েছে।৬ লাখ ৪৬ হাজার ৪৩ জন স্কুলছাত্রী জমিয়েছে ৬৪৩ কোটি ০৭ লাখ টাকা। জুন পর্যন্ত গ্রামের পাঁচ লাখ ৯৭ হাজার ৪৪৮ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন ব্যাংকে ৩২৯ কোটি টাকা জমা রেখেছে। শহরের ৯ লাখ ৪২ হাজার ৩৮৮ জন শিক্ষার্থী জমা করেছে এক হাজার ৯০ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, শিক্ষার্থীদের ৯ লাখ ৭৩ হাজার ৬১৮ টি ব্যাংক হিসাব খুলেছে বেসরকারী ব্যাংক। যা স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের ৬৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ সংখ্যক অর্থাৎ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৬টি হিসাব খুলেছে । যা হিসাবের ১৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
বার্তা কক্ষ /strong>
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৭:১০ পিএম,১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮,মঙ্গলবার
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur