ফল থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, শাক সবজি, এমনকি দুধে পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে ফরমালিন। তাই আমাদের অজান্তেই শরীরে ঢুকছে এ মারাত্মক বিষ কিছু মুনাফা লোভী ব্যবসায়ী তাদের পণ্য দীর্ঘদিন অবিক্রীত রেখে বিক্রি করার জন্য এটি ব্যবহার করে থাকে।
ফর্মালিন (রাসায়নিক সংকেত -CHO-) হল ফর্মালডিহাইডের পলিমার। ফর্মালডিহাইড দেখতে সাদা পাউডারের মত। পানিতে সহজেই দ্রবনীয়। শতকরা ৩০-৪০ ভাগ ফর্মালিনের জলীয় দ্রবনকে ফর্মালিন হিসাবে ধরা হয়। ফর্মালিন বস্তুটা মূলত টেক্সটাইল, প্লাষ্টিক, পেপার,রং,কনস্ট্রাকশন ও সর্বোপরি মৃতদেহ সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।
ফরমালিনে ফরমালডিহাইড ছাড়াও মিথানল থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। লিভার বা যকৃতে মিথানল এনজাইমের উপস্থিতিতে প্রথমে ফরমালডিহাইড এবং পরে ফরমিক এসিডে রূপান্তরিত হয়। দুটোই শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
ফরমালিন যুক্ত ফল চেনার উপায়
১.ফরমালিন যুক্ত ফলে প্রাকৃতিক সুবাসের পরিবর্তে ঝাঁঝালো এক প্রকার গন্ধ থাকে। ফলের বোটার অংশটি নাকের কাছে ধরুন। যদি প্রাকৃতিক গন্ধ না পান বা ঝাঁঝালো গন্ধ নাকে লাগে তাহলে নিশ্চিতভাবেই এতে ফরমালিন মেশানো হয়েছে।
২.প্রাকৃতিক ভাবে পাকা ফলের রঙ কিছুটা সবুজ বা কিছুটা হলুদ হয়ে থাকে। কিন্তু কার্বাইড মেশানো ফল আগাগোড়া সম্পূর্ণ হলুদ হয়ে যায় । প্রাকৃতিক ভাবে পাকা ফলের স্বাদ সম্পূর্ণটাই মিষ্টি হবে। কিন্তু রাসায়নিকভাবে পাকানো ফলের কিছু অংশ মিষ্টি এবং কিছূ অংশের স্বাদ টক হবে।
৩.স্বাভাবিক ফল পেকে যাওয়ার পর ফ্রিজে রাখা না হলে স্বভাবতই পচে যাওয়া শুরু করবে। কিন্তু ফরমালিন যুক্ত ফল ফ্রিজে না রাখলেও পচবে না। লিচুর রঙ কাঁচা অবস্থায় হবে সবুজ, পেকে গেলে ইট রঙের। এখন গাছে থাকা অবস্থায় রাসায়নিক দেয়ার কারনে তার রং হয়ে যায় ম্যাজেন্টা।
৪. রাসায়নিক দেয়া লিচুতে স্বাভাবিক স্বাদ বা গন্ধ থাকে না। বিশ্রী ঝাঁজালো ভাব থাকবে, আর রসালো হবে না। চেহারা দেখে ফল কিনবেন না। বিশেষ করে আম। অনেকেই দাগহীন মোলায়েম চেহারা দেখলেই আম কিনে ফেলেন। আমের চেহারা শতভাগ দাগহীন হওয়ার অর্থ যে একে কাঁচা অবস্থায় পাড়া হয়েছে এবং ওষুধ দিয়ে পাকানো হয়েছে। ৫. ফরমালিন যুক্ত ফলে মাছি,মৌমাছি ইত্যাদি পতঙ্গ বসে না।
শাক-সবজি ও মাছ থেকে ফরমালিন মুক্ত করার উপায়
১) রান্নার আগে কাঁচা মাছ ১ ঘণ্টা লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে ফরমালিনের পরিমাণ ৯০ শতাংশ কমে যাবে। ২) প্রথমে চাল ধোয়া পানিতে ও পরে সাধারণ পানি দিয়ে মাছ ধুলেও ফরমালিনের পরিমাণ অনেকটা কমে যায়।
২) মাছ রান্না করার আগে এক পাতিল পানিতে ৫ চামচ ভিনিগার মিশিয়ে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে মাছ পুরোপুরি ফরমালিন মুক্ত হয়। ৩) অনেকে শুটকি মাছ পছন্দ করেন। কিন্তু শুটকিতে প্রচুর পরিমাণে ফরমালিন মেশানো হয়। তাই রান্নার আগে প্রথমে গরম পানিতে ১ ঘণ্টা এবং তারপর স্বাভাবিক পানিতে আরও ১ ঘণ্টা শুটকি ভিজিয়ে রাখুন।
৪) যে কোনো ফল বা সবজি খাওয়ার বা রান্না করার আগে ১০ মিনিট লবণ মেশানো গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখুন।
এভাবেই ফরমালিন থেকে যতটুকু পরিত্রাণ পাবেন ততটুকুই আপনি ভালোটাই এবং বিশুদ্ধটা পাবেন । সূত্র: ইন্টারনেট
বার্তা কক্ষ
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১ : ৪০ পিএম, ২১ আগস্ট ২০১৮,মঙ্গলবার
এজি