২৪ ঘণ্টা আগে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় জীবন প্রদীপ নিভে গেছে দুই কলেজ শিক্ষার্থীর। আহতের অবস্থাও সঙ্গীন। ছাত্র-ছাত্রীরা সহপাঠীদের মৃত্যুর বিচার দাবিতে সারাদিন রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিল। এর মাঝেই সোশ্যাল সাইটে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে। খোদ রাজধানীতে বাস চালাচ্ছে মুন্না নামের এক কিশোর, যার বয়স ১৩ বছর!
সাকিব সৌখিন নামের একটি আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে আজ। এতে দেখা যাচ্ছে ড্রাইভিং সিটে বসে মুন্না রীতিমতো যানজটের মাঝে বাস চালিয়ে যাচ্ছে; আবার ভিডিওকারী ব্যক্তির প্রশ্নের জবাবও দিচ্ছে! এই দৃশ্য দেখে বাসের যাত্রীরা চিৎকার করছে, ‘আস্তে যা বাবা…’ কিন্তু মুন্নার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই! সে খুব সাবলীলভাবে বাস চালিয়ে যাচ্ছে! জবাবে তাকে সহায়তা করছে তার ওস্তাদ (মূল ড্রাইভার; ভিডিওতে নেই)।
প্রশ্নোত্তরে মুন্নার সম্পর্কে আরও কিছু ধারণা পাওয়া যায়। সে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। বাস হেলপার হিসেবে শুরু করে দেড় বছর আগে। আর ড্রাইভিং সিটে বসেছে নাকি এক বছর আগে! সে বাসে কাজ করা ছাড়া অন্য কোনো কাজও করতে আগ্রহী নয়। ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় পুলিশ ধরলে কী হবে? এর কোনো সুদুত্তর দিতে পারেনি মুন্না। তবে সে ঠিকই জানে পুলিশ থেকে বাঁচার উপায়!
এবার বলুন, শুভযাত্রা নামের এই বাসটি যদি কোনো দুর্ঘটনায় পড়ে, তবে পারবেন এই শিশুটিকে ধরে পেটাতে? মুন্নার যে ‘ওস্তাদ’ সে তো এক লাফে পালিয়ে যাবে! কুর্মিটোলায় গতকাল দুই শিক্ষার্থীকে হত্যা করে বাসচালক যেভাবে পালিয়েছিল, সেভাবে পালাবে! ‘শিশুরা ফুলের মতো, শিশুশ্রম নিষিদ্ধ’ এমন বহু ভালো ভালো কথা আমরা বলে থাকি। কিন্তু বাস্তবে মুন্নারা বাস চালায়; তাদের ড্রাইভিং সিটে বসিয়ে সাধারণ যাত্রীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে ‘ওস্তাদ’রা!
১৩ বছরের মুন্না এতটা রাস্তা বাস চালিয়ে এসেছে আর কোনো পুলিশের চোখে পড়েনি এটা হতেই পারে না। প্রশ্ন তুললে নিশ্চয়ই ভুল হবে না? কিন্তু সড়কে হত্যাকাণ্ডের কোনো সুরাহা হবে- এটা সূদূর ভবিষ্যতের বিষয়!
দেখুন ভিডিও :