চাঁদপুর শহরের মমিন পাড়ায় মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা ইমামুল হোসেনের নির্মম আঘাতে হিমেল (১০) নামের এক ছাত্র মৃত্যু শয্যায় রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত ছাত্র শরিয়তপুর জেলার সখিপুর থানার বাংলাবাজারস্থ বালারকান্দি গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে। তার অবস্থা আশংকাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
গত (১১ জুলাই) দুপুরে চাঁদপুর শহরের মমিন পাড়া ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ সংলগ্ন মাদরাসায়ে হযরত আবু বকর ছিদ্দিক (রাঃ) নামের মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ছাত্রের পিতা নুরুল আমিন জানায়, তার ছেলে হিমেলকে তিনি দীর্ঘদিন পূর্বে ওই মাদ্রাসায় নুরানী শাখায় পড়াশুনা করতে দেন। তার জন্য তিনি প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে বেতন প্রদান করে আসছেন। পড়াশুনার জন্য মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক মাওলানা ইমামুল হোসেন প্রায়ই তাকে বেধরক মারধর করতো। একই ভাবে গত ১১ জুলাই দুপুরে ওই শিক্ষক হিমেলকে অমানবিক ভাবে মারধর করে। ওই শিক্ষক হিমেলকে টেনে হেছড়ে দেয়ালের সাথে তার মাথায় আঘাত করেন। এভাবে এলোপাতারি ভাবে বেশ কিছু আঘাত করার কারনে হিমেল গুরুতর ভাবে আহত হয়ে পড়লে তার স্বজনরা খবর পেয়ে তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়।
গত বৃহস্পতিবার তার অবস্থার অবনতি দেখে স্বজনরা তার চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেলের কাছে নিয়ে যান। এদিকে চিকিৎসক তার অবস্থা গুরুতর দেখে মাথার সিটি স্কীনসহ বিভিন্ন পরিক্ষা করিয়ে তার অবস্থা আশংকাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন।
ওই মাদ্রাসায় সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়, কোন প্রকার পরিকল্পনা ছাড়াই একটি ফ্ল্যাট বাসায় কোন রকম তিনি নামেই মাত্র মাদরাসাটি চালাচ্ছেন। একটি মাদ্রাসা যে ভাবে চালানো প্রয়োজন তার কিছুই নেই। খবর নিয়ে জানাযায়, মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা এবং শিক্ষক মাওলানা ইমামুল হোসেন ছাত্রদেরকে প্রচুর মারধর করেন। তার পাশেরই এক গৃহবধূ জানান, ওইদিন ওই শিক্ষক তাকে প্রচন্ড ভাবে মারধর করেছেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তার মাথায় প্রচন্ড আঘাত প্রাপ্ত রয়েছে। মাথায় এমন আঘাতের কারনে তার অবস্থা খুবই গুরুতর। সে অনেকটা মানসিক রোগীর মতো শুধু মাথা ঝাকাচ্ছে। আমি তার মাথার সিটি স্কীনসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করিয়ে বুঝতে পেরেছি তার মাথায় ভেতর প্রচন্ড আঘাত রয়েছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেছি। এখন বাঁচা মরা আল্লাহর হাতে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা ইমামুল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি দেয়ালের সাথে মাথায় আঘাতের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করেছি। কিন্তু ওইদিন তাকে এমন কোন আঘাত করিনি।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur