কমলনগরের মেঘনা নদীতে তিন ভাইয়ের চার ঘণ্টার প্রচেষ্টায় ৩শ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ ধরা পড়েছে। আর ঘাটে একাধিক ক্রেতার প্রতিযোগিতামূলক ডাকে ওই ইলিশটি বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়! ইলিশের ভরা মৌসুমে যা চরম হতাশার।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার মাতাব্বরহাট মাছঘাটে ইলিশটি বিক্রি হয়। নুর উদ্দিন (২০), রবিউল (১৪) ও সালাহ উদ্দিন (১৬) মেঘনায় জাল ফেললে তাদের জালে ইলিশটি ধরা পড়ে।
বেলা ৩টার দিকে তারা ছোট একটি দাঁড়টানা নৌকা নিয়ে নদীতে যায়। মাঝ নদীতে জাল ফেলে তারা। চার ঘণ্টার প্রচেষ্টায় ছোট একটি ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফেরে তিন ভাই। আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী ইলিশ না পেয়ে হতাশ তারা। ইঞ্জিনচালিত নৌকা না হওয়ায় জালানি খরচ লাগেনি। তবে শরীরের ওপর দিয়ে গেছে সব ধকল।
নুর উদ্দিন, রবিউল ও সালাহ উদ্দিন কমলনগরের চর কালকিনি গ্রামের বাসিন্দা রইজল মাঝির ছেলে। ভাঙনে নদী গর্ভে বাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়ায় মেঘনা পাড়ে টং ঘরে তাদের বসবাস।
চলতি ইলিশ মৌসুম সামনে রেখে তারা মহাজানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নৌকা করে; জাল বোনে। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তারা নদীতে প্রতিদিন ইলিশ শিকারে যায়। তবে তাদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়েছে না। জালে এক-দুইটা মাছ ধরা পড়লেও আকারে ছোট।
সন্ধ্যায় জেলে রবিউল তাদের জালে ধরা পড়া মাছটি ঘাটে নিয়ে আসে। নির্ধারিত গদিতে বিক্রির জন্য রাখে। এসময় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় লোকজন মাছটি কিনতে ডাকে অংশ নেন। হাজিরহাট বাজারে বই ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর ১৫০ টাকায় মাছটি শেষ পর্যন্ত কেনেন। এসময় আপপাশের গদি ছিল ইলিশ শূন্য।
আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। এসময় প্রচুর বৃষ্টি ও জোয়ারে নদীতে পানি বাড়ে। তখন জেলেদের জালে ধরা পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। কিন্তু চলতি ইলিশ মৌসুমে যেনো নদীতে ইলিশ নেই। জেলেরা হতাশ হয়ে নদী থেকে ফিরছেন। তবুও প্রচুর ইলিশ ধরতে পারার আশায় রোজ তারা নদীতে যান।