প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা ও কথা বলার সুযোগটা তো খুব সহজে পান না শিল্পীরা। তাই তো সুযোগটা পেয়ে হাতছাড়া করলেন না বাংলাদেশের বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতা। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের দিন প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে কাজে লাগালেন ববিতা। মনের মধ্যে জমে থাকা ইচ্ছের কথাটা আর অব্যক্ত রাখলেন না। উপস্থিত অন্য অতিথিদের সামনেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়ে দিলেন।
গত রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেম মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা হয় ববিতার। এদিন বরেণ্য এই অভিনেত্রীর হাতে আজীবন সম্মাননার পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান শেষেই বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ হয় ববিতার। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘রাজ্জাক ভাই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এ দেশের চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান অনেকে। আমি চাই প্রয়াত শিল্পী নায়করাজ রাজ্জাকের নামে একটি ইনস্টিটিউট করা হোক। অথবা রাজ্জাক ভাইয়ের স্মৃতি অমর করে রাখতে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভকে তাঁর নামে নামকরণ করা হোক।’
ববিতা এ-ও বলেন, ‘জীবনের শেষ সময়টাতে অনেক শিল্পী ও কলাকুশলীকে দুঃখ-কষ্টে জীবন পার করতে হয়। জীবনের এই সময়টাতে শিল্পী ও কলাকুশলীরা যেন অন্তত নিজের ঘরে থাকা ও সুচিকিৎসার অধিকারটুকু পান, সে ব্যবস্থা যেন প্রধানমন্ত্রী করে দেন।’
ববিতার বক্তব্যের আগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘চলচ্চিত্র দেশ ও সমাজের উন্নতির জন্য অনেক ভূমিকা রাখতে পারে। একটা সময় ছবি দেখা বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। এখন মানুষ আবারও ছবি দেখছে। এটা আনন্দের খবর। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে, এমন বিষয় সিনেমায় তুলে ধরা প্রয়োজন।’
চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, সময় পেলেই তিনি চলচ্চিত্রও দেখেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন অনেক ভালো চলচ্চিত্র হয়। সব সময় তো দেখতে পারি না, তবে বিমানে যখন দেশের বাইরে যাই, চলার পথে ছবি দেখি। এ ছাড়া অন্য সময় তো খুব একটা সুযোগ পাই না। সারা দিন মিটিং আর ফাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়।’
চলচ্চিত্রশিল্পের গৌরবোজ্জ্বল ও অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আজীবন সম্মাননাসহ মোট ২৪টি বিভাগে শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজক ও কলাকুশলীকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হয়। চলচ্চিত্র নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীদের বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণে যা সহায়তা লাগবে, তা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন তিনি।