আজ ৯ জুন, আন্তর্জাতিক আর্কাইভস দিবস। ১৯৪৮ সালের এ দিনে ইউনেস্কোর অঙ্গ সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অন আর্কাইভস (আইসিএ) যাত্রা শুরু করে। মূলত তাদের উদ্যোগেই ২০০৮ সাল থেকে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক আর্কাইভ দিবস। ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি আর প্রশাসনের নীতিনির্ধারকদের সামনে আর্কাইভসের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্যই এ দিবসের সূচনা করে আইসিএ। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আর্কাইভস : গভর্নেন্স,মেমোরি, অ্যান্ড হেরিটেজ’
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে আরকাইভস ব্যবহারকারী, গবেষক এবং আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, প্রযুক্তিনির্ভর বাস্তবমুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, সুশাসন, তথ্যভাণ্ডার ও ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে ১৯৭২ সাল থেকে জাতীয় আরকাইভস কাজ করে আসছে। জাতীয় আরকাইভস আজ বাংলাদেশের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
ভূ-রাজনীতি, নিজস্ব ভাষা এবং সংস্কৃতি বিবেচনায় বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে নিজের স্থান করে নিয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় আরকাইভসের সংগ্রহশালায় রক্ষিত পুরাতন নথিপত্র দেশ-বিদেশের সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, গবেষকসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের নিকট গ্রহণযোগ্য ইতিহাস চর্চার অমূল্য দলিল। তাই আন্তর্জাতিক আরকাইভস দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘আর্কাইভস : গভর্নেন্স,মেমোরি, অ্যান্ড হেরিটেজ’বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি আশা করি এ দিবসটি পালনের মাধ্যমে আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদফতর আরকাইভসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে সমর্থ হবে।’
এদিকে অনুরূপ এক বানীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জাতীয় আরকাইভস খুব শিগগিরই দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধশালী কেন্দ্রীয় সংরক্ষণাগার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেছেন।
আজকের সৃষ্ট নথিপত্রই আগামী দিনের ঐতিহাসিক দলিল তথা মূল্যবান আরকাইভাল উপকরণ বলে বিবেচিত হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরকাইভস সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
তিনি বলেন, উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল।’ সম্প্রতি বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশের ক্যাটেগরিতে উন্নীত হয়েছে। এ স্বীকৃতি বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। গত সাড়ে ৯ বছরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির কেন্দ্রীয় সংরক্ষণাগার বাংলাদেশ জাতীয় আরকাইভস। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উপাত্তসমূহ সংরক্ষণ করা হয় জাতীয় আরকাইভসে। বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস চর্চা, শিক্ষা ও গবেষণা, রেফারেন্স ইত্যাদি ক্ষেত্রে জাতীয় আরকাইভসের গুরুত্ব অপরিসীম।