Sunday, April 12, 2015 02:49:48 PM
বিশেষ প্রতিনিধি :
হাজীগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক বিয়ে পাগল শিক্ষক ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ১২ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন। জানা গেছে, এ ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে তিনি এ বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন। আর এটি তার পঞ্চম বিয়ে।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। বিয়ে পাগল এই শিক্ষক উপজেলার রাজারগাঁও ইউনিয়নের রাজারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক একরাম হোসেন (৩৫)। রাজারগাঁও গ্রামের খান বাড়ির আবুল হোসেন মাস্টারের ছেলে তিনি।
বিদ্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এটি তার পাঁচ নম্বর বিয়ে। এর আগে একরাম আরো চারটি বিয়ে করেছেন। তিন স্ত্রী চলে গেছেন। বর্তমানে তার দুই স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে। এলাকায় ঝামেলার ভয়ে আগের স্ত্রী শিখা আক্তার বাবার বাড়িতে চলে গেছেন। ছোট স্ত্রীকে নিয়ে একরাম চাঁদপুর শহরে চাচার বাসায় উঠেছেন।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি ও ওই ছাত্রীর পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ওই ছাত্রীকে ফুসলিয়ে একরাম ধর্ষণ করেন। এতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে মেয়েকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের সহায়তায় চাঁদপুর শহরে নিয়ে তার গর্ভের বাচ্চাটি নষ্ট করে ফেলা হয়। পরে এলাকাবাসীর চাপে ২৭ মার্চ একরাম গোপনে চাঁদপুরে এফিডেভিটের মাধ্যমে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।
রাজারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তাক উল্যা জানান, ঘটনাটি নিয়ে মাস খানেক ধরে এলাকায় আলোচনা হচ্ছে। আমি এলাকাবাসীর মুখে শুনেছি বিয়ে হয়েছে। তবে সে আমার কাছে বিয়ের কথা স্বীকার করেনি। বিষয়টি আমি টিইও স্যারকে (প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা) জানিয়েছি।
রাজারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহসিন মিয়া জানান, তার বিরুদ্ধে (শিক্ষক একরাম) একাধিক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে। সে ১০/১২টি বিয়ে করেছে বলে এলাকায় প্রচারণা আছে। বিয়ে করা এবং ছাড়াই তার কাজ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা আক্তার মুন্সী বলেন, সে শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক, আমার এলাকার জন্য কলঙ্ক। মেয়েটির বাবা ও ভাইয়েরা এলাকায় কৃষি কাজ করেন। নিরীহ পরিবারের লোক হওয়ায় তারা আইন আদালত করেন নি। তিনি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
তবে একরাম হোসেন দাবি করেন, পরিবারের সম্মতি নিয়েই তিনি এ বিয়ে করেছেন। এলাকার কিছু ব্যক্তি ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের জন্য তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। একরাম বলেন, কোর্ট এফিডেভিটের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা কাবিননামায় তিনি বিয়ে করেছেন। পূর্বে আরো চারটি বিয়ে সম্পর্কে জানতে চাইলে একরাম একটি বিয়ের কথা স্বীকার করেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) আবদুল আউয়াল বলেন, তিনি বৃহস্পতিবার ঘটনাটি জেনেছেন। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/2015
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur