ঈদের ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য বিআইডাব্লিউটিসির নৌপথের বিশেষ সার্ভিস এ বছর ১৩ জুন থেকে চালু হবে। এ সার্ভিস ঈদের তিন দিন পর পর্যন্ত এ সার্ভিস চালু থাকবে। ছয়টি জাহাজের ঢাকা বরিশাল রুটে চারটি এবং চাঁদপুর থেকে মোরেলগঞ্জ রুটে দুটি স্টিমার চলাচল করার কথা রয়েছে। সরকারি রেট অনুযায়ী ডেকের ভাড়া ১৭০ এবং কেবিনের ভাড়া সিঙ্গেল ১৩২০ ও ডবল কেবিনের ভাড়া ২৩১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ সার্ভিসে যুক্ত থাকবে বিআইডাব্লিউটিসির ৯০ বছর বয়সী স্ট্রিমার পিএস অস্ট্রিচ ও পিএস মাহ্সুদ। ঈদ সামনে রেখে আগামী মাসের ১৩ তারিখ থেকে বিআইডাব্লিউটিসির বিশেষ ও নিয়মিত সার্ভিসে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের ছয়টি জাহাজই যাত্রী পরিবহন করবে।
অন্য নৌযানগুলো হলো—প্যাডেল স্টিমার লেপচা টার্ন এবং এমভি মধুমতি ও বাঙ্গালী। সরকারি এই ছয় জাহাজের মধ্যে পিএস মাহ্সুদ ও অস্ট্রিচ নির্মাণ হয়েছিল ১৯২৯ সালে। যাদের বয়স প্রায় ৯০ বছর। তবে সরকারি এ নৌযানে ভ্রমণ আমারদায়ক ও অধিক নিরাপদ হলেও যাত্রীরা শঙ্কিত থাকে মাঝপথে কখন বিকল হয়ে পড়ে সেই ভয়ে।
বিআইডাব্লিউটিসির বরিশাল অফিস সূত্র জানায়, সরকারি ছয় নৌযানের মধ্যে পিএস অস্ট্রিচ, পিএস মাহ্সুদ তৈরি হয় ১৯২৯ সালে, পিএস লেপচা ১৯৩৮ সালে আর পিএস টার্ন ১৯৫০ সালে নির্মাণ করা হয়। এমভি বাঙ্গালী ২০১৪ সালে আর ২০১৫ সালে নির্মাণ করা হয় এমভি মধুমতি জাহাজটি।
স্টিমারে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন এক যাত্রী মো. লতিফুর রহমান জানান, বরিশাল থেকে চলাচলকারী স্টিমারের কোবিনের সংখ্যা কম হওয়ায় ঈদে টিকিটের সংকট থাকে। কারণ বেশির ভাগ টিকিট ঢাকা থেকে বুকিং হয়ে যায়। এতে অনেকটা ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের। এর চেয়ে ভয়ংকর ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রার মাঝপথে জাহাজ বিকল হয়ে পড়া। স্টিমারে যাতায়াত করেন এমন এক যাত্রী হাসান আল শাহরিয়ার বলেন, গতবার স্টিমারে বাড়ি ফেরার সময় মাঝপথে স্টিমারের ইঞ্জিন বিকল হলে ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল। এবারেও যাত্রীদের শঙ্কা স্টিমার পুরনো বলে যেকোনো সময় তারা ভোগান্তিতে পড়তে পারে।
বরিশাল অফিসের টিকিট সহকারী মো. জাফর উল্লাহ খান জানান, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের নির্দেশনা আসতে পারে। ঈদের সময় বেশির ভাগ যাত্রী ফিরতি টিকিট আগাম ঢাকা থেকে নিয়ে থাকেন বলে বরিশালের যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী টিকিট দিতে পারছি না। বরিশালের যাত্রীদের কতটা টিকিট দিতে পারব তা নির্ভর করবে ঢাকা থেকে পাঠানো কোঠার ওপর।’
বিআইডাব্লিউটিসির বরিশাল কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সম্প্রতি প্রতিটি জাহাজই মেরামত করা হয়েছে। এ ছাড়া মাহ্সুদ ও অস্ট্রিচে রিপেয়ারিংকাজ চলছে। আগামী সপ্তাহে তা শেষ হবে। এ ছাড়া যাত্রীদের যাত্রাপথের ঝামেলা এড়াতে প্রতিটি জাহাজে থাকছে নিয়মিত টেকনিশিয়ান, পাশাপাশি দুজন ইঞ্জিনিয়ার সার্বক্ষণিক মাঠে থাকছেন। যাতে করে কোনো সমস্যা না হয়। নৌপথে নিরাপত্তা প্রদানে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হবে। ফলে এবার স্টিমার সার্ভিসে ঈদে বাড়ি ফেরা এবং কর্মস্থলে যাওয়া যাত্রীরা নির্বিঘ্নে যাত্রা করতে পারবে।
সূত্র: কালের কন্ঠ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur