প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাদকবিরোধী যুদ্ধ ঘোষণার পর সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানে নেমেছে র্যাব ও পুলিশ প্রশাসন।
শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ধরতে গিয়ে ইতিমধ্যে সারাদেশে প্রায় ৪০ জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।
র্যাব ও পুলিশের এ অভিযান অব্যহত থাকায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় গত কয়েক বছর ধরে মাদকসহ আটক হয়েছেন যারা, তারা এখন শুদ্ধ অভিযানে এলাকা থেকে গা-ঢাকা দিয়েছে বলে জানা যায়। র্যাব ও পুলিশের এমন কঠোর অভিযান রীতিমতো আতঙ্কিত করে তুলেছে মাদক ব্যবসায়ীদের।
চাঁদপুরের মধ্যে হাজীগঞ্জই মাদকের ভয়াবহতা সর্বাধিক। গত কয়েক বছর ধরে এ উপজেলার পুলিশের হাতে মাদকসহ আটক হয়েছেন যারা তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন পৌরসভার নির্বাচিত ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোরশেদ আলম ভূট্রো। তাকে কয়েকবার ফেন্সিডিল ও ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসাবে কয়েকবার ফেন্সীডিলসহ আটক করেছে কাজী দুলালকে। তিনিও বর্তমানে এলাকা থেকে আতœগোপনে রয়েছেন বলে জানা যায়। বাকিলা স্বর্ণার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী তুফান শরীফ কয়েকবার মাদকসহ আটক হয়েছে।
উপজেলার সোনাইমুড়ি গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ীর মৃত শাহআলমের ছেলে মিলন হোসেন মিরন (২৮)কে ১’শ পিস ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। এর পূর্বে একই গ্রাম থেকে পৌরসভাধীন কাশারী বাড়ীর জনি ও আরিফকে ৯’শ পিস ইয়াবাসহ আটক করেছিল পুলিশ। একই এলাকায় ফরহাদ নামক এক মাদক ব্যবসায়ীসহ একটি গ্যাং রয়েছে যারা প্রকাশ্যেই ইয়াবা ব্যবসা করে যাচ্ছে।
পৌরসভাধীন ৭নং ওয়ার্ড টোরাগড় গ্রামের বেপারী বাড়ির হেলালের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী শরীফ ইতিমধ্যে মাদক ও নগদ টাকাসহ আটক হয়েছেন। ৮নং ওয়ার্ড টোরাগড় গ্রামের শুকু মিয়ার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী বিল্লাল (৪২) মাদক ব্যবসার অভিযোগে পুলিশ ধাওয়া করেছেন।
একই ওয়ার্ডের জামাল হোসেনের ছেলে শাহাজাহান মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে জানা যায়। ধোপল্লা তালুকদার বাড়ীর সামনে চায়ের দোকানদার শামীম মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
মকিমাবাদ ৪নং ওয়ার্ড গাইন বাড়ীর খোরশেদ আলমের ছেলে হারুন অর রশীদ (২৮) কে ১ বছরের জেল, এবং একই এলাকার কাশারী বাড়ীর মৃত শাহআলমের ছেলে কাঞ্চন আলম ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে মাদকের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে।
এছাড়াও হাজীগঞ্জ থানার বর্তমান অফিসার ইনচার্জ মোহাং জাবেদুল ইসলাম সোনাইমুড়ি গ্রামের মজুমদার বাড়ীর চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহেলকে বিপুল পরিমান ইয়াবাসহ পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ড থেকে আটক করেছিল।
গত কিছুদিন পূর্বে মাদকের অভিযোগে ৬নং বড়ক‚ল পূর্ব ইউনিয়নের কবির হোসেন (৩৫), পিতা-আবু তাহের, মোঃ মুকবুল হোসেন(৩০) পিতা-মৃত মজিবুর রহমান, সবুজ মিয়া (৩০) পিতা হাফিজ উদ্দিন, মোঃ শাহজাহান(২৫) পিতা-আবুল কাশেম, বিল্লাল হোসেন(২৮) কে আটক করা হয়েছে।
হাজীগঞ্জ রামগঞ্জ সড়কের ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত আছে এমন কয়েকজনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বেলচোঁ বাজারের মহন চৌধুরী, সেন্দ্রা বাজারের ইদ্রিস, জয়শরার মজিব, চালিয়াপাড়ার রহিম ও গাদ্দাফি প্রমুখ।
এদিকে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন রান্ধুনীমুড়া ১০, ১১ ও ১২নং ওয়ার্ডে সন্ধ্যা নামলেই চলে জমজমাট ইয়াবার বিকি-কিনি। এসব এলাকায় মোটর সাইকেলে ফেরি করে ইয়াবার জমজমাট ব্যবসা চলছে। পৌরসভাধীন টোরাগড়, হাজীগঞ্জ পৌরসভারা সম্মুখে, ওয়াপদা এরিয়ার পৌরসভাধীন নদীর ঘাট, আলীগঞ্জ, হাজীগঞ্জ বাজারস্থ বিশ^রোড, ধড্ডা খালপাড় আড়ং, বাকিলায় জমজমাট ইয়াবার ব্যবসা চলছে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাবেদুল ইসলাম বলেন, আমরা মাদকের সাথে কখনো আপোশ করিনি এবং করবো না। আমাদের এ অভিযান সব সময় আছে এবং থাকবে।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, হাজীগঞ্জ।