অবশেষে বাংলাদেশের একমাত্র জেলা হিসেবে চাঁদপুর জেলাকে ভিক্ষুক মুক্তকরণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর, ভিক্ষাবৃত্তি হোক দূর’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়ছে।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪টি ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষাণা করা হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে সদর উপজেলার বাকি ১০টি ইউনিয়নকে ভিক্ষুক মুক্ত করা হবে। এছাড়াও এর সাথে সাথে অন্যান্য উপজেলা এবং সকল ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত করা হবে। ৯ মে বুধবার ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত ৪০২ জন ভিক্ষুকের মধ্যে চার ইউনিয়নে ১৫০জনকে পুর্নবাসন করে এই চার ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
ইউনিয়ন গুলো হলো, মৈশাদী, ইব্রাহীমপুর, হানারচর ও রাজরাজেশ^র। এসময় তিনি সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ১৫০ ভিক্ষুকের হাতে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন সহযোগিতা তুলেদেন। এছাড়াও উল্লেখিতদের তাদের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ দিয়ে পুনর্বাসন করা হয় এবং তারা আর ভিক্ষা করবেনা মর্মে অঙ্গীকার করেন।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এবং পূর্নাবসনকৃত ভিক্ষুকদের সহায়তা তুলে দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা।
প্রধান অতিথির বক্তবে ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, চাঁদপুরে আমার যে সকল অসহায়-দরিদ্র ভাই-বোনেরা রয়েছেন যারা শুধুমাত্র জীবীকার প্রয়োজনে ভিক্ষা করেন। তারা নিজেরাই চাচ্ছেন যে এই কাজ থেকে বেরিয়ে আসবেন। সমাজে একটু মাথা উঁচু করে দাড়াবেন। এজন্যে তারা চেয়েছেন যাতে করে তাদের একটু পুর্নাবসন হোক, একটু মাথা গুাঁজা আর কর্ম করে খাওয়ার অবলম্বন হোক।
অপরদিকে আমাদের মাননিয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার চেয়েছেন এই বাংলাদেশের একটি মানুষও যাতে ভিক্ষা না করে। তারা যাতে পুর্নাবসিত হতে পারে। শুধু তাই নয় আমাদের চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক নিজেও চাচ্ছেন চাঁদপুর জেলাকে ভিক্ষুক মুক্ত গড়ে তুলতে। এজন্য তিনি মাঠে,ঘাটে এমনকি লঞ্চে চড়েও অসহায়, অস্বচ্ছল, দরিদ্র মানুষ মানুষকে খুঁজে খুঁজে বের করে তাদের নগদ অর্থ, দোকান করে দেয়া, ঘর নির্মাণ করে দেয়া সহ নানান সহযোগিতা করছেন।
তিনি বলেন, এই যে আমাদের এতো সম্মিলিত প্রয়াস, চেষ্টা বা শ্রম তা হলো চাঁদপুরকে ভিক্ষুক মুক্ত করা। আমি বিশ্বাস করি আমাদের এই সম্মিলিত চেষ্ট বিফলে যাবে না। আজকে চাঁদপুর সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত ৪০২ জনের মধ্যে ৪ ইউনিয়নে ১৫০জন ভিক্ষুককে পুর্নবাসন করা হয়েছে। আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য, অর্থ দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আগামীতে আপনাদের সরকার ঘোষিত সামাজিক নিরাপত্তার সকল সহযোগিতা দেয়া হবে। তাই আমি বিশ্বাস করি আজ থেকে আপনারা আর ভিক্ষা করবেন না। এই মানুষগুলোকে আমরা আর ভিক্ষা করতে দেখতে চাই না। আমরা চাই আপনারা সম্মানের সাথে সমাজে মাথা উচু করে বাচুন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বলেন, মাননিয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘বাংলাদেশের মাটিতে আমরা আর কোনো মানুষকে ভিক্ষা করতে দেখতে চাই না। আমরা তেলে মাথায় তেল ঢালতে চাই না’। সেই লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কাজেই আমরাও আর চাঁদপুরে কোনো ভিক্ষুক দেখতে চাই না। আপনাদের সকলের সহযোগিতা পেলে চাঁদপুরকে ভিক্ষকুক মুক্ত জেলা হিসেবে গড়ে তুলে বাংলাদেশের মডেল করে তুলবো।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম