মালয়েশিয়ায় মো. জামাল মিয়া (২৮) নামে এক বাংলাদেশি শ্রমিককে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে কুমিল্লা সদর উপজেলার মদিনানগর এলাকার মো. জলিল মিয়ার ছেলে। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (৩ ডিসেম্বর) মালয়েশিয়ার সানওয়ে মেনতারি এলাকা থেকে পুলিশ জামালকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ইউনিভার্সিটি মালায় হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন (৪ ডিসেম্বর) মারা যায় সে। জামাল মালয়েশিয়ায় ৯ বছর ধরে আছে এবং গ্লোভটনিক্স নামে স্থানীয় একটি ইলেকট্রনিক্স কারখানায় কাজ করতেন।
নিহতের শ্যালক মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. লিটন এ প্রতিবেদককে জানান, জামাল গত সোমবার সকাল ৭টায় কাজের উদ্যেশে বাসা থেকে বের হয়ে সানওয়ে মেনতারি কোর্ট এলাকায় গেলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা স্থানীয় (মালয়েশিয়ান) ৪ যুবক ও ১ তরুণী সবাই মিলে তাকে হকিষ্টিক দিয়ে বেদম পেটাতে থাকে।
তিনি জানান, ঘটনাটি স্থানীয় লোকজন ও নিরাপত্তা কর্মীদের সামনে ঘটলেও তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। ১ ঘণ্টা পর পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
এ ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয়েছে কি-না জানতে চাইলে লিটন জানান, ৫ ডিসেম্বর (আজ) বুধবার তার ময়না তদন্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর থানায় (বালাই) একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।
তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে তার লাশ কয়েক দিনের মধ্যেই দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
কী কারণে তাকে এভাবে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে জানতে চাইলে কোম্পানির সুপারভাইজার লক্ষ্মীপুরের মো. মুসলেহ হোসেন বলেন, ‘জামাল আমার অধীনেই কাজ করত। ঘটনার খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম, তখন তার জ্ঞান ছিল। তার কাছে হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সে জানায় এই হামলার আগে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র তাকে একটি তরুণীকে দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে তার কাছে মোটা অংকের অর্থ দাবি করে। তাদের চাহিদামত অর্থ দিতে না পারায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়।
এ ঘটনায় কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করা হলে শ্রম কাউন্সিলর মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, কেনই বা তাকে হত্যা করা হয়েছে- তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। (জাগো নিউজ)
বার্তা কক্ষ
০৫ ডিসেম্বর,২০১৮