আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌকায় ভোট চাওয়া আমার অধিকার। কারণ আমি তো একটা দলের সভানেত্রী। কাজেই আমি যেখানেই যাব, অবশ্যই আমার দলের জন্য আমি ভোট চাইব। এটা আমার রাজনৈতিক অধিকার।’
শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বৈঠকের শুরুতে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ায় দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা। এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছিল।
সম্প্রতি ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহর সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। এসব সফরে সরকারি বিষয়ের পাশাপাশি নিজ দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘সরকারি খরচে নিজ দলের নির্বাচনী প্রচার’—এ বিষয়টির সমালোচনা করেছে বিএনপিসহ অনেকেই। সমালোচকদের অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আজ এ কথা বললেন।
বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হবে। অবশ্যই আমাদের সকলকে জনগণের কাছে যেতে হবে। নৌকায় ভোট চাইতে হবে। সকলকে বলতে হবে এবং বোঝাতে হবে; একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই এ দেশের মানুষ উন্নতি পায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়েই দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেয়েছে আর দেশের উন্নতির ছোঁয়াটাও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই পেয়েছে। কাজেই এই কথাটা সকলকে বলতে হবে যে আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চাই আর দেশের উন্নয়ন করার সুযোগ চাই।’
বিএনপি জোটের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় আসে ভোগ-বিলাস করতে, অর্থসম্পদ বানাতে আর মানুষ খুন করতে। ওই বিএনপি-জামায়াত জোট মানুষ পুড়িয়ে মারতে পারে, মানুষের ক্ষতি করতে পারে—মানুষকে অত্যাচার করাই তাদের কাজ। আর আওয়ামী লীগের কাজ হচ্ছে দেশকে শান্তিপূর্ণ করে প্রতিষ্ঠা করা। মানুষকে সেবা করাই আওয়ামী লীগের কর্তব্য। এই সেবা করার সুযোগটাই আমরা চাই।’
ভূরাজনৈতিক অবস্থানে বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এখানে আমরা অনেক কাজ করতে পারি। যার মাধ্যমে আমরা নিজেরাই অর্থ উপার্জনের পথ করে নিতে পারি। কিন্তু এদিকে কেউ কখনো দৃষ্টি দেয়নি। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মাঝে সেতুবন্ধ করার দায়িত্বটা বাংলাদেশ নিতে পারে। সেখান থেকেই আমাদের বিরাট অর্থনৈতিক অর্জন হতে পারে। কিন্তু এগুলো কখনো কেউ সেভাবে বোঝেওনি, ভাবেওনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে নিয়ে যাব। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছি। একদিন আমরা উন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাব।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সভায় দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কাজী জাফরউল্লাহ, সাহারা খাতুন, ফারুক খান, আবদুর রাজ্জাক, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।