দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সাথীর বিয়ে হয়। প্রবাসী স্বামী দেখে বিয়ের কাজ দ্রুত শেষ করে তার পরিবার। ছয় মাসের ছুটি থাকলেও তিন মাস আগে স্বামী পাড়ি দেয় প্রবাসেÑসেই তিন বছর আগের কথা।
বুধবার (৪ মে) দুপুরে মোবাইলে সাথী তার মাকে বলেছিলো মা, শরীর খুব খারাপ লাগছে। মা বলেছিল-তোর শ্বশুর অথবা পাশ্ববর্তী কামাল চাচাকে বলো হাসপাতালে নিয়ে আসতেÑ মায়ের সাথে শেষ কথা সাথীর।
বুধবার বিকেল ৩ টায় সাথীর বুক জ্বালা-পড়া করছে। ধরাধরি করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হল। কর্তব্যরত ডা.মাহমুদুর রহমান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সাথীর মৃতু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
তিন বছর আগে ২০১৩ সালে সাথীকে হাজীগঞ্জ উপজেলার ৮ নং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের বেলঘর গ্রামের সিরাজ ডাক্তারের বাড়ীর স্বপনের কাছে বিয়ে দেয়া হয়।
হাসপাতালের প্রমাণপত্রে সাথীর বয়স ২২ ধরা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সাথীর বয়স ১৭।
সাথীর মা তাছলিমা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে এক বছর ধরে শারীরিক যন্ত্রণায় ভূগছে। ডাক্তার বলেছে,তার স্বামী দেশে আসলে ভালো হয়ে যাবে। এর আগে দুই বার সাথী স্ট্রোক করেছিল।’
সাথীর মা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘স্বামীর সংসারে ধানের বোঝা বইতে বইতে আমার মেয়ের জীবনটা শেষ। প্রচন্ড গরমে মেয়ে অসুস্থ হয়ে গেছে। তাদের বাড়ীতে বিদ্যুৎ ছিল না। ফোনে জামাই ( মেয়ের স্বামী) কে কতবার বলেছি- দেশে আস। আর ধানের চাষ একটু কম করো। আমার মেয়েটা এই বয়সে এতো কাজ করতে পারে না।’
শ্বশুর আলী আকবর (৭০) বলেন, ‘ধানের কাজ চলছিল। হঠাৎ করে সাথীর বুক ব্যাথা শুরু হয়। হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।’
হাসপাতালের ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মেয়েটি কি কারণে মারা গেছেÑ তা বুঝা যাচ্ছে না। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন বিষক্রিয়ার আলামত পাওয়া যায়নি।
কোন পক্ষের অভিযোগ না থাকায় মেয়েটিকে তার মায়ের কাছে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল মান্নান।
হাজীগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট : আপডেট ৩:০০ এএম, ০৫ মে ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur