প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ২০১৯ সাল থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা নতুন প্রশ্নপত্র ও নতুন পদ্ধতিতে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে নতুন পদ্ধতি কী হবে, তা আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় এ উদ্যোগের কথা জানানো হয়। পাবলিক পরীক্ষাসংক্রান্ত এ সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আগামী বছর থেকে এসএসসি পরীক্ষা নতুন পদ্ধতিতে নিতে পারব। সভায় সবাই প্রশ্নব্যাংক তৈরির বিষয়ে একমত হয়েছেন।’
পরীক্ষায় এমসিকিউ (বহুনির্বাচনী প্রশ্ন) থাকবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি আগে থেকেই এমসিকিউ বন্ধের বিষয়ে বলে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বলার পর এটা এখন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হবে।
চলতি এসএসসি পরীক্ষায় একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় এই জরুরি সভা ডাকা হয়। তবে সভায় আগামী দুই এপ্রিল থেকে শুরু উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা কীভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সোহরাব হোসাইন বলেন, যেহেতু আগামী এইচএসসি পরীক্ষা নতুন পদ্ধতিতে নেওয়ার সুযোগ নেই। তাই এটা কীভাবে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্তগুলো অব্যাহত থাকবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যেকোনো জায়গায়, যে কারও হাতে পেলে আইনের আওতায় আনা হবে। চলতি এসএসসি পরীক্ষায় এ পর্যন্ত ১৫২ জনকে আটক করা হয়েছে। অপরাধীদের আটকের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এছাড়া, প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষায় প্রশ্ন ছাপিয়ে কেন্দ্রে পাঠানোর বদলে অনলাইনেই প্রশ্ন পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের জানান, ‘আমি মনে করি এমন পদ্ধতি তৈরি করা প্রয়োজন যে পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র ছাপানো হবে না ও বিতরণ করাও হবে না। তাহলেই আর ফাঁস হওয়ার সুযোগ থাকবে না।’
তবে এই চিন্তা চূড়ান্ত নয় জানিয়ে সচিব বলেন, ‘আগামী বছর থেকে কোন প্রশ্নপত্র ছাপানো হবে কিনা তা নিয়ে ভাবতে হবে। হয়তো কোন ডিভাইজ দিয়ে সরাসরি পরীক্ষার হলে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।’ ‘আমি যেটা মনে করি, প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়ার যে প্রক্রিয়া এখন আছে এ পদ্ধতিতে কোনভাবে প্রশ্নফাঁস ঠেকানো সম্ভব হবে না।’
প্রসঙ্গত, গত ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সবগুলো প্রশ্নই পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ফাঁস হয় এবং সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে প্রশ্ন ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ৫ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিলেও ফাঁস বন্ধ হয়নি।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২: ২০ পি.এম ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বুধবার।
কে এইচ .