সম্প্রতি প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে সোস্যাল মিডিয়াসহ গণমাধ্যম ও শিক্ষাঙ্গনে চরম হৈ চৈ বিরাজ করছে। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন রাষ্ট্রের সুশীলসমাজ। ডিজিটাল প্রেমিদের মৌলিকা চাহিদার অংশ ইন্টারনেট বন্ধ করেও এ সমস্যা থেকে রেহাই পাচ্ছেন শিক্ষা বিভাগ।
এ নিয়ে অনেকেই নানা মত দিলেও একজন উপ-সচিবের মতামত ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই তার মতটি শেয়ার করেছেন। কেউ আবার একাত্মতা পোষণপূর্বক কপি করে পোস্ট দিচ্ছেন।
চাঁদপুর টাইমসের পাঠকদের জন্যে উপ-সচিব মোহাম্মদ আবদুল হাইয়ের মতামতটি তুলে ধরা হলো।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিন :
(১) সকল পরীক্ষার হলে পাসওয়ার্ড যুক্ত ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড দিন এবং ৪ জি নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করুন।
(২) পরীক্ষার হলে সিসি ক্যামেরা দিন।
(৩) পরীক্ষা শুরুর আধ ঘন্টা আগে পরীক্ষার হলের গেটে তালা লাগিয়ে দিন যাতে শিক্ষক ছাত্র কেউ বাহির বা প্রবেশ করতে না পারে।
(৪) ম্যাজিস্ট্রেট পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে পাসওয়ার্ড দিয়ে ডিসপ্লে বোর্ড অন করবে।
(৫) ঢাকা হতে কেন্দ্রিয়ভাবে লগইন করার সাথে সাথে সকাল দশটায় ডিসপ্লে বোর্ডে প্রশ্ন ভেসে উঠবে এবং পরীক্ষা শুরু হবে ।
(৬) যথাসময়ে ডিসপ্লে বোর্ড অফ হয়ে যাবে এবং পরীক্ষা শেষ !
এ পদ্ধতির সুবিধা সমূহ :
(১) প্রশ্ন ছাপানোর দরকার নেই । ফলে এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। কাগজও বাঁচবে।
(২) প্রশ্ন পরিবহণের ঝামেলা নেই । ফলে পরিবহণ খরচ সরকার ও পরীক্ষা কেন্দ্রের নেই ।
(৩) প্রশ্ন ফাঁস হবার সুযোগ নেই । পাসওয়ার্ড দিলে ম্যাজিস্ট্রেটের মোবাইলে আট ডিজিটের কোড নং যাবে । কোড নং সঠিক হলে ডিসপ্লে বোর্ড অন হবে। এ ছাড়াও ডিজিটাল বোর্ড বিশেষ আইপি যুক্ত হবে । ফলে অন্য কোন ডিভাইসে প্রশ্ন অন হবে না।
তারপরেও পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে পরীক্ষার হলের মেইন গেট তালাবদ্ধ থাকবে এবং ঠিক সময়ে প্রশ্ন ডিসেপ্ল বোর্ডে আসবে ফলে কোনমতেই ফাঁস বা নকল করার সুযোগ থাকবে না।
(৪) সকাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল হবে ।
এ পদ্ধতির অসুবিধা সমূহ:
(১) প্রশ্ন ছাপানো ও কাগজ ক্রয় কমিটি সম্মানী হতে বঞ্চিত হবে।
(২) প্রশ্ন পরিবহণের নামে অফিস খরচ, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ যাতায়াত ভাতা এবং কেন্দ্র সচিবের ইনকাম বন্ধ হয়ে যাবে।
(৩) বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক না থাকলে প্রশ্ন ডিসপ্লে হবে না ।
(৪) চোখে চশমা ওয়ালা ছাত্রছাত্রীরা ভালো করে প্রশ্ন দেখবে না।
সার্বিক বিবেচনায়, ডিজিটাল বাংলালাদশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্ন ফাঁস বিহীন নকলমুক্ত পরীক্ষা হবে । এনালগ পদ্ধতি বিলুপ্ত হবে। জাতি ডিজিটাল সন্তান পাবে ।
এক পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপানো, পরিবহণ, সংরক্ষণ ও বিতরনে যা খরচ হয় তার তুলনায় ডিজিটালে খরচ কম হবে । পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচন আধুনিক করলে একই কেন্দ্রে জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া যাবে । একবার বিনিয়োগ করলে আগামী দশ বছরে কোন বড় খরচ হবে না । কেবল পরীক্ষার আগে ডিসপ্লে বোর্ড ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে।
মোহাম্মদ আবদুল হাইয়ের আরো কিছু লেখা পড়তে ক্লিক করুন ‘শনিবারের শনির দশা’
লেখক- প্রাক্তন এডিসি (শিক্ষা-আইসিটি) ও ডিডিএলজি, চাঁদপুর।
বর্তমানে ডেপুটি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর(স্মার্ট কার্ড),
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, ঢাকা
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur