দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে আজ বুধবার (২৪ জানুায়ারি) বিকেল ৩টায় বৈঠক করতে যাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।
সংসদ সচিবালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকের পর আজ অথবা আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি।
মঙ্গলবার সকালে সংসদ সচিবালয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজনের ভোটার তালিকাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল ইসি। পরে বিকেলেই ওই চিঠির জবাব দিয়েছে সংসদ সচিবালয়।
এ বিষয়ে ইসি সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘বুধবার বিকেল ৩টায় স্পিকারের সঙ্গে সিইসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সাক্ষাৎ চেয়ে মঙ্গলবার কমিশন থেকে সংসদ সচিবালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। বিকেলে সংসদ সচিবালয় থেকে চিঠির মাধ্যমে সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে সংসদ সদস্যদের দলভিত্তিক বিভক্তি সংখ্যা, নাম এবং নির্বাচনী এলাকাগুলো উল্লেখ করে চিঠিটি পাঠানো হয়। স্পিকার-সিইসির বৈঠকের পর তফসিল ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে।
গত সোমবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন থেকেও গতকাল এই সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্ব গ্রহণ করা বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পাঁচ বছরের মেয়াদ এ বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে। আর সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদ অবসানের পূর্ববর্তী ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে সংবিধানের ১২৩ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে উক্ত পদ শূন্য হইলে মেয়াদ-সমাপ্তির তারিখের পূর্ববর্তী নব্বই হইতে ষাট দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।’ আইনজ্ঞরা বলছেন, মেয়াদ পূরণের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বলতে প্রথম ৩০ দিনকে বোঝাবে।
সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান থাকায় সংসদের চলতি ১৯তম অধিবেশনের মধ্যেই এ নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ অধিবেশন চলবে।
এর আগে ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন, ১৯৯১-এর ৭ ধারায় বলা হয়েছে—নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। পরীক্ষার পরে একজনের মনোনয়নপত্র বৈধ থাকলে নির্বাচন কমিশন ওই ব্যক্তিকে নির্বাচিত বলে ঘোষণা করবেন। তবে একাধিক ব্যক্তির মনোনয়নপত্র বৈধ থাকলে বৈধভাবে মনোনীত ব্যক্তিদের নাম মনোনয়নপত্র পরীক্ষার দিন ঘোষণা করবেন। সে অনুযায়ী ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল আবদুল হামিদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় তাঁকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। সংসদে ক্ষমতাসীন দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে অন্য কোনো দল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ক্ষমতাসীন দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তিনিই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।
এ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয় প্রকাশ্যে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গোপনে অন্য দলের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ সংসদ সদস্যদের (এ নির্বাচনের ভোটার) নেই।
সংসদে প্রধানমন্ত্রী-স্পিকার অনির্ধারিত বৈঠক সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০ : ১৫ এএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮, বুধবার
এইউ