দু’-আড়াই মাস ধরে গ্যাস সংকটে হা হা কার করছেন চাঁদপুর পৌরসভার ১২ ওয়ার্ডবাসী। শহরের অন্যান্য স্থানে গ্যাস সংকট কিংবা গ্যাসের কোনো ধরনের সমস্যা না হলেও ১২ নং ওয়ার্ডস্থ দক্ষিণ বিষ্ণুদী বঙ্গবন্ধু সড়ক, চেয়ারম্যান ঘাটা, দর্জিঘাট, মিশন রোড ও রেললাইনের দক্ষিণ পাশের খান বাড়ি সড়কসহ এসব এলাকার বাসিন্দারা দু-আড়াই মাস ধরে চাঁদপুর বাখরাবাদ গ্যাসের বেলকিবাজিতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জানাযায়,চাঁদপুর বাখরাবাদ গ্যাস বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের ভুক্তভোগী হাজার হাজার গ্রাহক কয়েক মাস ধরে প্রতিমাসে গ্যাসের বিল পরিশোধ করেন ঠিকই কিন্তু তারা প্রতিদিন চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস ব্যবহার করতে পারছেন না। এলাকাগুলোতে ভোরে গ্যাস চলে গেলে তা ফিরে আসে দুপুরে। যার জন্যে গৃহিণীদের সংসারের রান্না নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে ।
ওইসব এলাকার বাসিন্দা জুলহাস মিজি, হানিফ মিজি, শেফালী বেগম, নুরু মিজি, আনোয়ার মিজি, মিজান মিজি, বিলকিস বেগম, মনির মোল্লা, হাফেজ খান, আক্কাছ খানসহ একাধিক ব্যাক্তিগণ জানান, গ্রাহকরা চাঁদপুর শহরের দর্জিঘাট হতে শুরু করে চেয়ারম্যান ঘাটা, বিটি রোড, বঙ্গবন্ধু সড়ক, মাদ্রাসা রোড, মিশন রোড খান সড়ক, ট্রাকরোডসহ ১২ ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় প্রায় দু’ আড়াই মাস ধরে ঠিকমতো গ্যাস ব্যবহার করতে পারছেন না ।
এসব এলাকার অনেক বাসিন্দারা জানিয়েছেন দু’ থেকে আড়াই মাস ধরে প্রতিদিন সকাল ৬/৭ টার দিকে গ্যাস চলে গেলে তা ফিরে আসে দুপুর কিংবা বেলা সাড়ে ১১টা ১২ টায়। যার কারণে গৃহিনীরা সকালের নাস্তা তৈরি করতে গিয়ে গ্যাসের অপেক্ষায় থেকে কঠিন দুর্ভোগে থাকতে হচ্ছে।
যে পরিমাণ গ্যাসের চাপ থাকে তা দিয়ে ঠিকমতো চুলায় আগুন জ্বেলে রান্না করা স¤্ভব নয়। কিছু গ্রাহক সামান্যতম গ্যাস পেলেও যাদের একটি রাইজারের সংযোগ থেকে দু’টি চুলোর সংযোগ নিয়েছেন তারা কোনো গ্যাস পাননি বলে জানা গেছে।
তাই তাদেরকে বাধ্য হয়েই বাহির থেকে খাবার এনে সকালের নাস্তা সারতে হয়। সকালের নাস্তা বাহিরে থেকে ক্রয় করে এনে সারলেও দুপুরের খাবার রান্না করার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকতে হয় গৃহিনীদের।
অনেক সময় গ্যাসের পূর্ণ পেশার থাকলেও রান্না করার সময় হঠাৎ গ্যাস চলে যায়। আর এভাবে গ্যাস চলে যাওয়ার কারণে দেখা যায়, অনেক সময় অনেক গ্রাহকের ভাত রান্না হলে তরকারি রান্না হয়না, আবার তরকারি রান্না হলে কারো কারো ভাত রান্না হয় না। এ জন্য প্রতিদিনের রান্না নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় গৃহিনীদের।
বঙ্গবন্ধু সড়কের মিজান মিজি জানান, গ্যাসের এমন সমস্যার জন্য দীর্ঘদিন পূর্বে আমরা লিখিত ভাবে দরখাস্ত করেছি কিন্তু তাতেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেনা কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও মৌখিকভাবে বেশ ক’ বার জানানো হয়েছে তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এখন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া হয়তো আমাদের আর কোনো উপায় নেই।
চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ৮-৯ মাস পূর্বে দর্জিঘাট এলাকা থেকে মিশন রোড পর্যন্ত গ্যাসের এমন সমস্যা ছিলো। তখন স্থানীয় লোকজন গ্যাস অফিসে গিয়ে ক’ হাজার টাকার বিনিময়ে তা মেরামত করেছেন। তখন ওই এলাকায় গ্যাসের কাজ করতে আসা অফিসের লোকজন জানিয়েছেন অন্তত সেখানে আর কখনো গ্যাসের এমন সমস্যা হবেনা।
অথচ তারা এমন প্রতিশ্রæতি দেয়ার ৮-৯ মাস না পেরুতেই গ্যাসের চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই এলাকার লোকজন। গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন,আমরা প্রতিমাসে তো গ্যাস বিল ঠিকই পরিশোধ করি। কিন্তু আমরা তো ক’মাস ধরে ঠিক মতো গ্যাস ব্যবহার করতে পারছিনা। নিত্য প্রয়োজনীয় গ্যাসের এমন দুর্ভোগ থেকে স্থায়ী সমাধান পেতে চায় বাখরাবাদ গ্যাসের গ্রাহকরা।
এ ব্যাপারে বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড চাঁদপুর বিতরণ কার্যালয়ের ম্যানেজার মহিবুর রহমান রতন জানান, শীতকালে গ্যাসের ঘনত্ব বেড়ে যায়। এ কারণে শীত আসলে গ্যাসের এ সমস্যাটা বেশি দেখা দেয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে শীত আসলে কি শুধু ওই এলাকায়ই গ্যাসের ঘনন্ত বেড়ে গিয়ে এমন সমস্যা দেখা দেয় ? না কি শীতের মৌসুমে প্রত্যেক এলাকায়ই এমন সমস্যা হতে পারে ? এমন প্রশ্নের উত্তর চেয়ে ওই এলাকার গ্যাসের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি /strong>
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬:৫০ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮,মঙ্গলবার
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur