পাহাড়ের চূড়ায় ওঠা লাই চি হোয়ায়ের নেশা। এশিয়ান রক ক্লাইম্বিং চ্যাম্পিয়নশিপে চারবার বিজয়ীও হয়েছিলেন। কিন্তু কারো কারো ভাগ্য হয়তো অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই নির্মম। ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় লাইয়ের কোমর থেকে পা পর্যন্ত অকেজো হয়ে যায়। বাকি জীবনের জন্য তাঁর সম্বল হয় হুইলচেয়ার।
তবু হার মানেননি হংকংয়ের এই বাসিন্দা। ভয়াবহ ওই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার পাঁচ বছর পর একই দিনে আবারও হংকংয়ের লিওন রক পর্বতের শিখা ছুঁয়েছেন তিনি। তবে আগে আর পাঁচ-দশজন সুস্থ পর্বতারোহীর মতো চূড়ায় পৌঁছলেও এবার তাঁর সঙ্গী ছিল হুইলচেয়ার।
লাই তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘জ্ঞান ফিরে দেখলাম আমি হাসপাতালে। হাসপাতালের একজন কর্মী বললেন, আমার পা প্যারালাইজড হয়ে গেছে। বাকি জীবনটা হুইলচেয়ারেই কাটাতে হবে।’
৩৩ বছর বয়সী লাই আবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন সন্তানের বাবা হওয়ার পর। ছোট্ট শিশুটার দিকে তাকিয়ে যেন হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পান। ২০১৪ সালে আবারও লিওন রকে ওঠার ঘোষণা দেন। পরিবার ও বন্ধুরা তাঁর নিরাপত্তার কথা ভেবে এই ঘোষণায় খুশি হয়নি মোটেও। কিন্তু দমে যাননি লাই চি।
এর পরই প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে হুইলচেয়ার বক্সিং প্রতিযোগিতায় লড়াই করেন। আবারও পাহাড় ডিঙানোর স্বপ্ন পূরণ করতে হুইলচেয়ারে বসেই নিজের পুরনো পর্বত আরোহী বন্ধুদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। এরপর সত্যি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর হুইলচেয়ারে করেই ৫০০ মিটার উঁচু লিওন রকের চূড়ায় উঠে যান।
শুধু সাধারণ মানুষ নয়, বিশেষজ্ঞ পর্বত আরোহীরাও মুগ্ধ লাইয়ের এই হুইলচেয়ারে চেপে পাহাড় জয়ে। লাই চিয়ের একজন প্রশিক্ষক বলেছেন, ‘লিওন রকে উঠতে প্রশিক্ষিত পর্বত আরোহীদের কঠোর অনুশীলন করতে হয়। দুরারোহ পর্বতটির চূড়ায় পৌঁছতে কমপক্ষে চার ঘণ্টা সময় লাগে। সেখানে কেউ হুইলচেয়ারে করে চূড়ায় পৌঁছবে, তা কল্পনাও করা যায় না।’
নিউজ ডেস্ক:
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৪:০৫ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০১৮,শুক্রবার
এএস