একসময় আমাদের দেশে জমিদারদের অাধিপত্য থাকলেও এখন আর অস্তিত্ব নেই। তবে তাঁদের রেখে যাওয়া স্থাপত্যশৈলী এখনো নজর কারে। তেমনই এক জমিদার বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ‘কড়ৈতলী জমিদার বাড়ি’। জমিদার বাড়িটি ঘুরে লিখেছেন রিফাত কান্তি সেন-
কালের বিবর্তনে স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছে জমিদারদের অস্তিত্ব। হাতি, ঘোড়া, পাইক, পেয়াদা না থাকলেও ঠায় দাঁড়িয়ে আছে জমিদারদের রেখে যাওয়া স্থাপত্যশৈলী। পোড়া ইট-পাথরের দেয়ালে বাসা বেঁধেছে বিভিন্ন রকমের উদ্ভিদ আর শেওলা। তবুও ঐতিহ্যমণ্ডিত জমিদার বাড়িটি আজও টিকে আছে আপন গৌরবে। যদিও জমিদারদের অধঃস্তন কেউ এখন সেখানে নেই।
দৃষ্টিনন্দন জমিদার বাড়িটির সৌন্দর্য দিন দিনই কমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন লতা-পাতা মোড়ানো উদ্ভিদগুলো এখন সেখানে একক অধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১২২০ সালে হরিশ চন্দ্র বসুর হাত ধরে জমিদারদের কড়ৈতলীতে প্রত্যাবর্তন। ১৯৫১ সালে শেষ জমিদার ‘গোবিন্দ চন্দ্র বসু’র হাত ধরে সমাপ্তি ঘটে রাজ পরিবারের। প্রায় তিনশ’ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত জমিদার বাড়িটির অস্তিত্ব এখন সামান্য জায়গাজুড়ে।
লোকমুখে শোনা যায়, সেখানকার জমিদাররা অনেক আগেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁদের বংশের কেউই এখন আর খবর নিতে আসেন না। জমিদার বাড়িটি ‘বাবুর বাড়ি’ নামে সবার কাছে পরিচিত। বাবুর বাড়ি বললেই একনামে চেনে উপজেলাবাসী। জমিদার বাড়িটিতে রয়েছে দুর্গা মন্দির, বিধ্বস্ত প্রাসাদ, অট্টালিকা, কাছারি ঘর এবং সুরঙ্গপথ। এছাড়া ‘বাবুর দীঘি’ নামে বিশাল এক দীঘিও রয়েছে। কড়ৈতলী বাজারে রয়েছে ‘শ্মশানকালী মন্দির’। তবে সেখানে এখন আর পূজার ব্যবস্থা নেই। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটক এসে ভিড় জমান বাড়িটি দেখতে।
স্থানীয় মো. হাসান জানান, বাবুর বাড়িটি দেখতে অনেক মানুষই ছুটে আসেন। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা স্থাপত্যশৈলীর ব্যাপারে জানতে ছুটে আসেন। প্রতিদিনই বাড়িটি লোকারণ্য হয়ে যায়। এলাকাবাসী মনে করেন, প্রশাসন যদি বাড়িটিকে পর্যটকদের জন্য আরো আকর্ষণীয় করে তোলে তবে পর্যটন স্থান হিসেবে আরো প্রচার পাবে। পাশাপাশি প্রাণ ফিরে পাবে এই এলাকার পর্যটন খাত। অর্থনীতির দিক থেকেও এগিয়ে যাবে গ্রামটি।
চাঁদপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে কড়ৈতলী। ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন ও রাতে ছেড়ে আসে চাঁদপুরগামী লঞ্চ। ঢাকা থেকে আসা যাত্রীরা লঞ্চে করে আসলে ভাড়া পড়বে ডেক যাত্রী ১০০ টাকা, প্রথম শ্রেণি ২৩০ টাকা। এছাড়া সিঙ্গেল কেবিন ৪০০ টাকা এবং ডাবল কেবিন ৮০০ টাকা। চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে সিএনজিতে যাওয়া যাবে কড়ৈতলী। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০১:০৩ পিএম, ৪ জানুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur