চালকদের অসচেতনতা ও অসাবধানতার কারনে দিন দিনই চাঁদপুরে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। অনাকাঙ্খিত এসব সড়ক দুর্ঘটনায়ে অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক পরিবারের বৃদ্ধ, শিশু ও নারী পুরুষরা।
চাঁদপুরে একের পর এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘনা ঘটার পরেও অসর্তকতার সাথে গাড়ি চালাচ্ছেন কতিপয় চালক।
আর এসব দুর্ঘনার মূল কারন বলে জানা গেছে, অনবিজ্ঞ, অদক্ষ চালক, অপ্রাপ্ত বয়সে গাড়ি চালানো, পেশাদার ড্রাইভিং লাইন্সেস না থাকা, প্রতিযোগিতা দিয়ে গাড়ি চালানো, এবং গাড়ী চালানো অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বলাসহ আরো অনেকগুলো বিষয় রয়েছে।
গত কয়েক মাসে যেসব সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে তার বেশির ভাগই দেখা গেছে সিএনজি স্কুটার, অটোবাইক এবং বেপরোয়া মোটরসাইকেল।
আর চালকদের এমন অনিয়ম ও অসাবধানতার কারনে গত দু’মাসে চাঁদপুর জেলার বিভিন্নস্থানে অনেক অনাকাঙ্খিত সড়ক দুর্ঘনা ৮ জন নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন অন্তত দুই প্রায় দেড় শতাধিকের ও বেশি। এদের মধ্যে কেউ কেউ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। আবার কাউকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
গত দু’মাসে চাঁদপুর জেলা শহরের বিভিন্নস্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ জন ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে গত ১৩ নভেম্বর সোমবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়ালপুর চৌরাস্তায় দু’সিএনজি স্কুটারের মুখোমুখি সংর্ঘষে স্বপন মিয়া (৫০) নামের এক সিএনজি স্কুটার চালক ও দেড়বছর বয়সী মেয়ে মরিয়ম আক্তার নামের এক শিশুর করুন মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় একই পরিবারের ৯ জন শিশু ও নারীসহ মোট ১১ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
এদের মধ্যে ৫ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩০ অক্টোবর ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়ায় ট্রাকের ধাক্কায় সুভাষ মজুমদার (৬০) নামে এক মুক্তিযুদ্ধা নিহত হয়। একইদিন চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় আনোয়ার গাজী (৪৫) নামে এক মোটর সাইকেল আরোহী নিহত হয়। ৪ অক্টোবর একই মহাসড়কের ঘোষের হাট এলাকায় স্কুটারের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে উভয় যানের চালক মোহাম্মদ আলী (২৮) ও মো. রাসেল গাজী (২০) নিহত হয়েছে।
৩ অক্টোবর বাবুরহাট বিসিকের সামনে একটি পিকআপ ভ্যান থেকে লোহার পাইপ ছিটকে পড়ে মোস্তাফা কামাল (২৫) নামে এক সিএনজি স্কুটার চালক নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয় ৫ যাত্রী। এছাড়াও ১৩ অক্টোবর চাঁদপুর-রায়পুর সড়কের বাগাদী নিজগাছ তলায় সিএনজি স্কুটারের ধাক্কায় গোপাল পাল (৩২) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয় এবং ২৩ নভেম্বর কচুয়া উপজেলার ঢাকা সড়কের বাতাপুকুরিয়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মনির হোসেন মিয়াজী (৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়। হিসেব করে দেখা গেছে গত দু’মাসে বিভিন্নস্থানের সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৮ জন যাত্রী এবং চালক নিহত হয়েছে। চাঁদপুরে এভাবে একের পর এক দুর্ঘটনায় মানুষজন প্রাণ দিলোও সচেতন হচ্ছেনা কেউ, কমছেনা সড়ক দুর্ঘটনা।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগের টি আই,এম ইসরাফিল মজুমদার চাঁদপুর টাইমসকে জানান, অজ্ঞ, অশিক্ষিত এবং পেশাদার লাইন্সেস না থাকায় চালকরা অসর্তক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। তাদের এমন অসবধানতায় অনেক সময় অনেক অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনা ঘটে।’
তিনি আরো জানান, ‘সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে হলে চালকদেরকে অনেক সচেতন হতে হবে এবং সাবধানে রাস্তায় গাড়ে চালাতে হবে। এর পাশাপাশি চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগ আয়োজিত প্রতিমাসে চালক ও হেলপারদের প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
ট্রাফিক বিভাগের এ কর্মকর্তা চালক ও হেলপারদের প্রশিক্ষণ সম্পর্কে চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের এ প্রশিক্ষণ গত ৩ মাস ধরে হয়ে আসছে। যে সকল চালক এবং হেলপার ট্রাফিক বিভাগের এই প্রশিক্ষণ নেননি তাদের প্রতি আমার আহŸান থাকবে তারা যেনো ট্রাফিক বিভাগের এমন প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন। তাহলে হয়তো চাঁদপুরে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা কমে আসবে। ’
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
: পডেট, বাংলাদেশ ৬ : ৫৫ এএম, ২১ নভেম্বর, ২০১৭ মঙ্গলবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur