শিরক মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। আল্লাহ তাআলা মানুষের শিরকের গোনাহ ক্ষমা করবেন না। তাওহিদের শ্রেষ্ঠ আহ্বান হলো শিরকে আকবর থেকে বিরত থাকা। কারণ সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করাই হলো শিরকে আকবর বা বড় শিরক। যেমন-
>> আল্লাহ তাআলাকে না ডেকে অন্য কাউকে ইবাদতমূলক আহ্বান ও সেজদা করা।
>> আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্যের নামে পশু জবাই বা কুরবানি করা।
>> আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে দুনিয়া ও পরকালের সব কল্যাণ ও অকল্যাণের মালিক জানা।
>> কাউকে ভবিষ্যতের অজানা অমঙ্গল দূরকারী হিসেবে সাব্যস্ত করা।
>> আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সন্তান দানকারী হিসেবে মেনে নেয়া বা কারো কাছে সন্তান চাওয়া।
>> ব্যবসা-বাণিজ্যে আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে উন্নতি দানকারী মানা।
>> আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে ভাগ্য সুপ্রশস্তকারী হিসেবে সাব্যস্ত করা।
মূল কথা হচ্ছে-
যে সব ইবাদত ও ক্ষমতা আল্লাহ তাআলার জন্য খাস বা নির্ধারিত; সে সব বিষয়ে আল্লাহ তাআলাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মুখ, অন্তর, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা বিশ্বাস ও সেজদা করাই হলো শিরকে আকবর বা বড় শিরক।
যা মানুষকে তাওহিদ তথা একত্ববাদ থেকে বের করে দেয়। যাদেরকে আল্লাহ তাআলা কখনো ক্ষমা করবেন না। তাদের ব্যাপারে কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-
>> ‘আল্লাহ অবশ্যই তার সঙ্গে শিরকের গোনাহ ক্ষমা করবেন না। এ ছাড়া অন্যান্য যত গোনাহই হোক না কেন; তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করেছে; সে তো এক বিরাট মিথ্যা রচনা করেছে এবং কঠিন গোনাহের কাজ করেছে।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৪৮)
>> ‘যদি তাঁরা (নবী রাসূলগণ) শিরক করতেন তবে অবশ্যই তাদের সমস্ত নেক আমল বরবাদ হয়ে যেত।’ (সুরা আনআ’ম : আয়াত ৮৮)
>> ‘(হে নবি!) আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি ওহি করা হয়েছে যে, যদি আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার স্থাপন করেন, তাহলে আপনার সব আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৬৫)
>> ‘তারা নিঃসন্দেহে অবিশ্বাসী (কাফের), যারা বলে, ‘মরিয়মের ছেলে মসিহ-ই আল্লাহ। অথচ মসিহ বলেছিল, ‘হে বনি ইসরাইল! তোমরা আমার এবং তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহর উপাসনা কর। অবশ্যই যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার স্থাপন করে, আল্লাহ তার ওপর জান্নাত হারাম করে দেন। তার পরিণতি হবে জাহান্নাম। এ সব জালিমদের কেউই সাহায্যকারী নেই। (সুরা মায়িদা : আয়াত ৭২)
সুতরাং দুনিয়া ও পরকালের সফলতা শিরকমুক্ত ঈমান ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ এ শিরক সম্পাদনকারী সম্পূর্ণরূপে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়। আর তা সরাসরি কুফরির নামান্তর। ফলে তার কোনো নেক আমল কাজে আসে না বরং সবই বিফলে যায়। তাই শিরকমুক্ত ঈমান লাভে তাওহিদের ওপর পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনই ঈমানের একান্ত দাবি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শিরকমুক্ত ঈমাণ গ্রহণ করে তাওহিদের ওপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। কুরআনে ঘোষিত সব অনিষ্টতা থেকে হেফাজত করুন। দুনিয়া ও পরকালের যাবতীয় কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
ধর্ম ডেস্ক
: আপআপডেট, বাংলাদেশ ১২ : ৪০ পিএম, ৬ নভেম্বর, ২০১৭ সোমবার
এইউ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur