চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে রহস্যজনক কারণে খাদিজা আক্তার (১৩) নামে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। রোববার(২২ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টার সময় কাছিয়াড়া মহিলা মাদ্রসা সংলগ্ন বাসায় কিশোরীর এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহত কিশোরীর বাড়ি ফরিদগঞ্জ পৌরসভার কাছিয়াড়া গ্রামে। সে কাছিয়াড়া মহিলা মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। স্থানীয়জনগণ তাকে উদ্ধার করে হাসপতালে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল থেকে লাশ থানায় নিয়ে গেছে।
নিহত কিশোরীর মা রাবেয়া বেগম হাসপতালের বারন্দায় বিলাপ দিয়ে কাঁদছিলেন। তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, রোববার বিকাল সাড়ে ৩টার সময় মাদ্রাসায় না যাওয়ার কারণে খাদিজাকে বকাঝকা ও চড় থাপ্পড় দেই। আমি ঘর থেকে চলে যাওয়ার পর খাদিজা ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর দরজা বন্ধ দেখে আমি তাকে ডাকা ডাকি করি। কিন্তু দরজা খুলছে না দেখে পাশ^বর্তী লোকজনকে ডেকে এনে বসত ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে সিলিং ফ্যানের সাথে খাদিজাকে ঝুলতে দেখি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এসর্ম্পকে ফরিদগঞ্জ থানার এস আই মো. মোবারক এ প্রতিনিধিকে বলেন, মায়ের সাথে অভিমান করে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে খাদিজার মা রাবেয়া বেগম।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ওই এলাকার স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কলোনী বাড়ির ইব্রাহীমের সাথে নিহত কিশোরীর মা রাবেয়া বেগমের প্রথম বিয়ে হয়। বিয়ের পরে রাবেয়া বেগমের সংসারে আসে তিন সন্তান হয়। খাদিজা ছিলো তাদের মধ্যে বড়। কিন্তু গত এক বছর পূর্বে রাবেয়া বেগম তার প্রথম স্বামীর ঘর ছেড়ে একই বাড়ি মো. জাহাঙ্গীর আলম (মালু) কে বিয়ে করে। জাহাঙ্গীর আলম মালু ক্ষুদে মাছ ব্যবসায়ী। সেও পূর্বে একটি বিয়ে করে। বর্তমানে জাহাঙ্গীর আলমের প্রথম বউ থাকে কলোনী বাড়িতে। আর দ্বিতৃীয় বউ রাবেয়া বেগমকে নিয়ে সে কাছিয়াড়া মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় থাকে। রাবেয়া বেগম বিভিন্ন হোটেল ও বাসায় মসলা বাটা ও রান্নার কাজ করে।
সূত্র জানায়, জাহাঙ্গীর আলম মালুর দুই স্ত্রীর কারণে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরিবারে কলহ লেগেই আছে। আর দ্বিতৃীয় বিয়ে নিয়ে মায়ের সাথে মত বিরোধ ছিলো খাদিজার। পারিবারিক কারণে বয়স অনুসারে তার শ্রেণি শিক্ষাকার্যক্রম সঠিকভাবে আগায় নি।
এসর্ম্পকে জাহাঙ্গীর আলম মালু বলেন, প্রতিদিনের মতো আজ সাকলেও আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে ব্যবসার কাজে বাহিরে চলে যাই। কিন্তু খবর পেয়ে হাসতালে এসে দেখি আমার মেয়ে খাদিজা আর বেঁচে নেই।
এদিকে কিশোরী খাদিজার অপমৃত্যুতে এলাকাতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই তার মৃত্যুর খবর শুনে হাসপতালে ভিড় জমায়।
প্রতিবেদক- আতাউর রহমান সোহাগ
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১:০৩ পিএম, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ রোববার
ডিএইচ