Home / আন্তর্জাতিক / স্ত্রীর কাছে ভালো থাকতে ‘স্বামীদের পাঠশালায়’ ভর্তির গল্প
স্ত্রীর কাছে ভালো থাকতে ‘স্বামীদের পাঠশালায়’ ভর্তির গল্প

স্ত্রীর কাছে ভালো থাকতে ‘স্বামীদের পাঠশালায়’ ভর্তির গল্প

স্ত্রী আমিনাতার প্রায় সব কাজেই রেগে যেতেন ব্রিমাহ কানু। বিশেষ করে আমিনাতা যখন নিজের উপার্জন থেকে বিভিন্ন বিল পরিশোধ করতেন, তখন প্রচণ্ড হিংসা হতো কানুর। প্রায়ই রাগ সামলাতে না পেরে আমিনাতাকে মারধরও করতেন তিনি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। দিনে দিনে আরও ভালো স্বামী হচ্ছেন কানু। এসব সম্ভব হয়েছে ‘স্বামীদের পাঠশালার’ কারণে।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে কানুর মতো ১০ হাজারের বেশি পুরুষ প্রতি মাসে এক দিন ‘স্বামীদের পাঠশালায়’ যান। লিঙ্গসমতা, পারিবারিক সহিংসতা, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসহ নানা বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয় এসব স্কুলে।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) পরিচালিত ‘স্বামীদের পাঠশালা’ সিয়েরা লিওনে কার্যক্রম শুরু করে ২০১২ সালে। এর আগে নাইজারে এই স্কুলের যাত্রা শুরু হয়। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় স্কুলগুলো পরিচালনা করা হয়। এই স্কুলের অন্যতম স্লোগান, ‘আর মারধর নয়’।

৫২ বছর বয়সী কানু সিয়েরা লিওনের উত্তরাঞ্চলীয় বোমবালি এলাকায় থাকেন। তিনি জানান, স্ত্রী আমিনাতার সংসারজীবনের ১৮টা বছরই কেটেছে তাঁর কাছে মার খেয়ে। কানু বলেন, ‘আমি পুরোপুরি দুর্বৃত্ত ছিলাম। আমাদের পাঁচ সন্তানের কেউ দুষ্টুমি করলেই আমি মারধর করতাম। সে সময় যদি আমার স্ত্রী এসে ফেরানোর চেষ্টা করত, তাহলে তাঁকেও মারতাম।’

বাড়ির আঙিনায় আলু আর চিনাবাদামের চাষ করেন আমিনাতা। এসব বিক্রি করে আয় করেন তিনি। আর এটাই কানুর চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিল। স্ত্রী আমিনাতা যখন কোনো বিল পরিশোধ করতেন, বেকার কানু তখন হিংসায় ভুগতেন।

কানু জানান, হঠাৎ একদিন এক সমাজকর্মী তাঁর কাছে এলেন। বোঝালেন তাঁকে। ওই সমাজকর্মীর কথায় বিবেক জাগল কানুর। সিদ্ধান্ত নিলেন, ভালো স্বামী হবেন তিনি। এরপরই স্বামীদের পাঠশালায় ভর্তি হয়ে যান তিনি।

বিশ্বব্যাংকের ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পারিবারিক সহিংসতা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তর্ক করলে, শারীরিক সম্পর্কে অনীহা প্রকাশ করলে কিংবা অনুমতি না নিয়ে বাড়ির বাইরে গেলেও নারীদের পারিবারিক সহিংসতার শিকার হতে হয়। উন্নত বিশ্বের তুলনায় আফ্রিকায় এই হার বেশি।

স্ট্যান্ড টু এন্ড রেপ নামের একটি সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আয়োদেজি ওবোসবির মতে, আফ্রিকা মহাদেশে অনেক পুরুষই নারীদের সম্পত্তি মনে করেন। পারিবারিক সহিংসতার অন্যতম কারণ এটি।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ০৫:০৩ পিএম, ১০ অক্টোবর, ২০১৭ মঙ্গলবার
ডিএইচ

Leave a Reply