‘মা ইলিশের ডিম ছাড়ার সুযোগ দিন, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা নিন’-এ স্লোগানে শনিবার মধ্য রাত (১ থেকে ২২ অক্টোবর) থেকে সারাদেশের মতো চাঁদপুরেও শুরু হয়েছে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম। এ সময় ইলিশসহ সব মাছ শিকার, মজুত, বাজারজাতকরণ ও ক্রয়-বিক্রিয় নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
পদ্মা-মেঘনা নদীর চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজেন্ডার পর্যন্ত ১শ’ কিলোমিটার এলাকা হচ্ছে ইলিশ প্রজননের নিরাপদ স্থান। সে আলোকে এসব এলাকায় জেলা ট্রাস্কফোর্স কমিটি মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সফিকুর রহমান জানিয়েছেন, ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা টাস্কফোর্স ব্যাপক প্রচার প্রচারণা এবং জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ীসহ জনসাধারণকে সচেতন করতে উদ্বুদ্ধকরণ সভা করছে। মা ইলিশ রক্ষায় প্রতিদিন নদীতে অভিযান চলবে। জেলেদের ইলিশ ধরা থেকে বিরত রাখতে চাঁদপুরের প্রশাসন বদ্ধ পরিকর।
চাঁদপুর নৌ-পুলিশের দায়িত্বরত পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার বলেন, মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে অভয়াশ্রম এলাকায় টহল জোরদার করা হবে। পাশাপাশি স্থানীয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহযোগিতা করবে নৌ পুলিশ। এ অভিযান রাতেও পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অবৈধ পথে ইলিশ পাচাররোধেও নৌ পুলিশের টহল জোরদার থাকবে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিছুর রহমান বলেন, মিঠা পানির কারণে চাঁদপুর ইলিশ প্রজনন এলাকা হিসেবে পুর্ণিমার আগে ও পরে ২২ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময় যেন নিরাপদ এলাকা হিসেবে ইলিশ মাছ সম্পূর্ণ ডিম ছাড়তে পারে সে জন্য প্রশাসনসহ সবাই কাজ করবে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মণ্ডল বলেন, ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ এর কৃতিত্ব জেলাবাসীর। সবার সহযোগিতায় বিগত দিনে অভিযান সফল হয়েছে। ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে যার সুফল আমরা পেয়েছি। আমি আশা করি আগের মতো এবছরও প্রশাসনকে জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের। আইন অমান্য করে কোনো জেলে মাছ আহরণ করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না। জাতীয় সম্পদ রক্ষায় আমরা কঠোর সিদ্ধান্তে নিতে বাধ্য হব।
গত মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের জারি করা এক আদেশে বলা হয়, প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিস অ্যাক্ট ১৯৫০ অনুযায়ী ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ বা বিক্রয় নিষিদ্ধ।
সরকারের এ আদেশ অমান্য করে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে।
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
: : আপডেট, বাংলাদেশ ২: ০৩ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ শনিবার
ডিএইচ