ভাই প্রবাসে থাকার সুযোগে ভাবির সঙ্গে দেবরের পরকীয়া সম্পর্ক শুরু হয়। এর জের ধরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ভাবি। দেবরকে চাপ দেন বিয়ে করতে। দেবর পড়ে যান বিপদে। অবশেষে কৌশলে ভাবিকে মধ্যরাতে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যান বাড়ি থেকে অনেক দূরে। অতঃপর বন্ধুর সহায়তায় ভাবিকে গলাকেটে হত্যা করেন।
গেল ২৭ মে ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের সিংড়া উপজেলার গটিয়া গ্রামে। নিহত গৃহবধূর নাম শাপলা বেগম (২৪)। তিনি গটিয়া গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে হোসেন আলির স্ত্রী। আর ঘাতক দেবরের নাম বাবু আলী (১৮)।
হত্যাকাণ্ডের ১১২ দিন পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গেল ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে অভিযান চালিয়ে শাপলা হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবু আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ভাবি শাপলার কাছ থেকে নেয়া এক লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়।
পরদিন রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাবুকে আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার মূল কারণ, পরিকল্পনা এবং কীভাবে, কোথায় তাকে হত্যা করা হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেন বাবু আলী। এ সময় আদালতের বিচারক ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাটোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল হাই। জবানবন্দিতে দেয়া বাবুর স্বীকারোক্তি উল্লেখ করে ওসি জানান, প্রায় দুই বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যর দেশ ওমানে যান বাবুর বড় ভাই হোসেন আলি। এই সুযোগে আসামি বাবু তার ভাবি শাপলার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে তার ভাবি শাপলা বেগম পরকিয়া প্রেমিক দেবর বাবুকে জানান তিনি মা হতে চলেছেন। এজন্য বাবুকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন।
এক পর্যায়ে কৌশলগতভাবে ভাবির বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হন বাবু। চলতি বছরের ২৭ মে রাত ১২টায় শাপলা দুই বাচ্চা রেখে দেবর বাবু এবং তার বন্ধু রহিমকে নিয়ে মোটরসাইকেলে অজানা উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে সিংড়া এলাকায় শাঐল গ্রামে রাস্তার পাশে নির্জন স্থানে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দুজন মিলে চাকু দিয়ে ভাবি শাপলা বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেন। এ সময় ওই গৃহবধূর সঙ্গে থাকা এক লাখ টাকা ও তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে সটকে পড়েন বাবু ও তার বন্ধু রহিম। পরদিন ২৮ মে রাত ৮টার দিকে স্থানীয়রা মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
পরে এই ঘটনায় শাপলার ভাই আশরাফ হোসেন বাদী হয়ে সাত জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর আসামি বাবুকে নাটোর ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ০৯ : ২৫ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সোমবার
এইউ