Home / জাতীয় / ভিজলো চোখ, বাকরুদ্ধ প্রধানমন্ত্রী
ভিজলো চোখ, বাকরুদ্ধ প্রধানমন্ত্রী

ভিজলো চোখ, বাকরুদ্ধ প্রধানমন্ত্রী

মিয়ানমারের সহিংসতায় নির্যাতিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবির পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী।

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত ও নারকীয় তাণ্ডব, নির্বিচারে হত্যা, লুণ্ঠন ও ধর্ষণের বর্ণনা শুনে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধুকন্যারা।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বললেন, ‘স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি। ঘরবাড়ি হারিয়ে যেসব রোহিঙ্গা এখানে (বাংলাদেশে) এসেছেন, তারা সাময়িক আশ্রয় পাবেন। তাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।’

উপস্থিত নির্যাতিতা রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা আপনাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমরা আপনাদের পাশে থাকব। আপনারা যাতে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন, সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।’

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে সংক্ষিপ্ত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর গুলিতে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। নাফ নদীতে নারী-শিশুর লাশ পাওয়া যাচ্ছে। এই বর্বর হত্যাকাণ্ড মেনে নেয়া যায় না। মানবিক দিক বিবেচনা করেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। উপায় না দেখে এ দেশের মানুষ তখন ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

এর আগের দিন রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে একাত্তরের মহানমুক্তিকে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন, ‘আমারও তো রিফিউজি ছিলাম। রিফিউজি থাকার যন্ত্রণা কি তা আমরা বুঝি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী বাহিনী যেভাবে নির্যাতন করেছে সে দৃশ্যই ভেসে ওঠছে। আমাদের জন্য কঠিন এতো মানুষ রাখা, আশ্রয় দেয়া। তবে তারা যে মানুষ, তাদের ফেলে দিতে পারি না।’

শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে গিয়ে আরো বললেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমাদের যা করার দরকার, আমরা সেটি করব। আমরা শান্তি চাই।’ রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিকভাবে জনমত গড়ে তোলার আহ্বানও জানান।

এর আগে বেলা সোয়া ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিমানে করে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বেলা সাড়ে ১১টায় পৌঁছান উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গাশিবিরে। বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম, মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রমুখ।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১ :৫০ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ মঙ্গলবার
এইউ

Leave a Reply