চাঁদপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মনির হোসেনের সাহসিকতায় ২১ জেলেকে আটক করা হয়েছে। শনিবার(২৩ মার্চ)দুপুরে পদ্মা নদীর মান্দের নামক স্থানে অভিযান করে এ আটক করা হয়।
জানা যায়,মার্চ-এপ্রিল দুই মাস দেশের নদ-নদীতে ইলিশ আহরণ, সংরক্ষণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সেজন্য জেলা টাস্কফোর্সের অধীনে নদীতে বিশেষ অভিযান করা হচ্ছে। কিন্তু প্রায়ই নদ-নদীতে অভিযানে গেলে মেজিস্ট্রেটদের ওপর অসাধু জেলেরা হামলা চালিয়ে বাঁধা সৃষ্টি করছে।
এসব বিষয়ের কোন তোয়াক্কাই করেন না চাঁদপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মনির হোসেন। তিনি প্রতিনিয়তই নদীতে অভিযানে যাচ্ছেন এবং তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে চেষ্টা করছেন।
এই অভিযানে আটককৃতরা হচ্ছেন, মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার বালাকিরচর গ্রামের আব্দুল আউয়ালের আনোয়ার হোসেন, মুনতাজের ছেলে কামাল, ইব্রাহিমের ছেলে দুলাল হোসেন, সালাম বেপারীর ছেলে মোক্তার হোসেন, হাসানআলীর ছেলে কিবরীয়া, যরত আলীর ছেলে হারুন রশিদ, মোঃ তাজলের ছেলে আব্দুল, আলমাছ আলি বেপারীর ছেলে মোঃ হান্নান বেপারী, সমশের আলীর ছেলে মনির হোসেন,রহমত মালের ছেলে সাদেক বেপারী, ইদ্রিস আলী বেপারীর ছেলে আব্দুল আলী, হযরত আলীর ছেলে নবী হোসেন।
সৈয়দ আলীর ছেলে আব্দুল মতিন, ছালে মিয়ার ছেলে আবুল কালাম, গোলাম হোসেনের ছেলে মমতাজ উদ্দিন, আনসার আলীর ছেলে মোঃ মহিন উদ্দিন, হযরত আলীর ছেলে শাহ আলী, গোলজার হোসেনের ছেলে আব্দুল ছাত্তার, মোঃ অরুন মিয়ার ছেলে মোঃ শুক্কুর আলী, নূর ইসলাম মিয়ার ছেলে মোঃ আল মমিন, মঈল মিয়ার ছেলে মোঃ ইসহাক মিয়া।
অভিযান শেষে চাঁদপুর নৌ পুলিশের এস আই মনির হোসেন জানান, চাঁদপুর নৌ পুলিশ কখনোই সরকারি আইন অমান্যকারী কাউকে পশ্রয় দেয় না। আর আজকের আটক তার প্রমান। যারা আটক হয়েছে এরা কেউই চাঁদপুরের নয়। তাই আমরা চাঁদপুরের জেলেদের ত নয়ই। অন্য কোন জেলার জেলেদেরও নদীতে জাটকাসহ অন্য কোন ইলিশ ধরতে দিবো না।
আমাদের নৌ পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ(ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হোসেন জানান, চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে আমরা প্রতিনিয়ত নদীতে অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের অভিযানের জন্য চাঁদপুরের জেলেরা নদীতে জাল ফেলার সাহস পাচ্ছে না। আজ যারা আটক হয়েছে এরা সবাই চাঁদপুরের বাইরে।মূল কথা চাঁদপুরের ভিতর বাহির যাই-হউক কোন জায়গার জেলেদেরকে মার্চ-এপ্রিল নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরতে দেওয়া হবে না।
তিনি জানান, আজ নৌ পুলিশের এই অভিযানে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আনুমানিক মূল্যের ৩টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা জব্দ করা হয়। ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আনুমানিক মূল্যের প্রায় ১৫ হাজার মিটার সুতার জাল এবং প্রায় ২ লক্ষ টাকা মূল্যের ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও অভিযানে প্রায় ৩০ কেজি জাটকা ইলিশ জালে পাওয়া গেলে সেগুলোও জব্দ করা হয়।
আমরা অভিযান শেষে মোবাইল কোর্ট করার জন্য মেজিস্ট্রেটকে খবর দিয়েছি। এ দিকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিদুজ্জামান জানান, মৎস সম্পদ রক্ষণ আইন ১৯৫০ সালের ৪ ধারা ভঙ্গের অপরাধে ৫ এর ১ ধারা মোতাবেক আটক ২১ জনের ২০ জনকে ১ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে জেলা হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি ১ জনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান,আটককৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। সেই সাথে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আটক ইঞ্জিন চালিত নৌকাগুলো নৌ পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এদিকে নৌ পুলিশের এমন অভিযান ধারাবাহিকভাবে নদীতে অব্যাহত থাকবে বলে সচেতনমহল মনে করছে।
করেসপন্ডেট
২৩ মার্চ,২০১৯