কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি ২০১৯ উপলক্ষে র্যালি ও জেলা শুমারি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জুন) জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিসংখ্যান অফিসের আয়োজনে সকাল সাড়ে ৯টায় চাঁদপুর সার্কট হাউজ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা শুমারি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য ও প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিষয় বস্তুুর উপর ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব চাঁদপুরের কৃতি সন্তান ড. মো. শাহাদাত হোসেন।
তিনি বক্তব্যে বলেন, আমাদের জাতীয় জিডিপিতে কৃষির অবদান শতকরা ১৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এটা আগামীতে আরো বাড়বে। ধানের ক্ষেত্রে কমলেও মাছ, সবজি, ফলের ক্ষেত্রে অনেক বাড়বে। এই শুমারির মাধ্যমে কেবল ধান ও পাট নয়, হাঁস, মুরগী, গরু-ছাগল সবকিছুর তথ্য পাওয়া যাবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, কৃষি শুমারি ২০১৯ পরিচালনার মাধ্যমে কৃষি খানার সংখ্যা, খানার আকার, ভূমির ব্যবহার, কৃষির প্রকার, শস্যের ধরন, চাষ পদ্ধতি, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগীর সংখ্যা, মৎস্য উৎপাদন ও চাষাবাদ সংক্রান্ত তথ্যাদি এবং কৃষি ক্ষেত্রে নিয়োজিত জনবল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যাণ ব্যুারো (বিবিএস) এই শুমারি পরিচালনা করছে। শুমারি চলবে আগামী ২০ জুন পর্যন্ত।
জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে এবং জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ-পরিচালক আবু খালেদ মো. সাইফ উল্লাহ এর পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর সরকারী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এএসএম দেলওয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের সচিব মো. মিজানুর রহমান, জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুর রশিদসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
উন্মুক্ত প্রশ্ননোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা কর্মকর্তা আবুল কাশেম, মতলব দক্ষিণ উপজেলা কর্মকর্তা সুধির চন্দ্র সরকার, শাহরাস্তি উপজেলা কর্মকর্তা অনামিকা ভদ্র, মতলবের আলোর প্রধান সম্পাদক কে এম মাসুদ প্রমুখ।
কৃষি শুমারি ২০১৯ বাস্তবায়নের লক্ষে পল্লী এলাকায় গড়ে ২৪০টি, পৌরসভা এলাকায় গড়ে ৩০০টি এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় গড়ে ৩৫০টি খানা নিয়ে একটি গণনা এলাকা গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে কৃষি শুমারির তথ্য সংগ্রহে সমন্বয়কারী থাকবে।
এরই মধ্যে সমন্বয়কারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি গণনা এলাকায় তথ্য সংগ্রহের জন্য স্থানীয়ভাবে শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের গণনাকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
শুমারিতে একজন প্রধান শুমারি সমন্বয়কারী, একজন জাতীয় শুমারি সমন্বয়কারী, একজন অতিরিক্ত জাতীয় শুমারি সমন্বয়কারী, ১০ জন বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারী, ৯০ জন জেলা শুমারি সমন্বয়কারী (ডিসিসি), ৪৯২ জন উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী (ইউসিসি), ২ হাজার ১২৭ জন জোনাল অফিসার, ২৩ হাজার ১৬৫ জন সুপারভাইজার এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার ২১১ জন তথ্য সংগ্রহকারী কাজ করছেন।এদেশে ১৯৬০ সালে প্রথমবারের মত নমুনা আকারে কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩-৮৪, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ষষ্ঠবারের মতো দেশে কৃষি শুমারি ২০১৯ পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়।