৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন : ক্ষণগণনা শুরু

বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আর মাত্র ৯০ দিন পর। সংবিধান অনুসারে এ ৯০ দিনের মধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। সে হিসেবে ১ নভেম্বর থেকেই শুরু হচ্ছে সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা। দু সপ্তাহের মধ্যেই এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে ফেলেছে।

নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুসারে জানুয়ারির প্রথমভাগেই অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করতে মাঠে সক্রিয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ অধিকাংশ দল। আর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে শেষ ধাপের আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে সক্রিয় রয়েছে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো। তাদের নির্বাচনে নিতে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহল সচেষ্ট। শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে যাবে কি না- তা এখনো অনিশ্চিত। তবে আন্দোলনের পাশাপাশি তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতিও আছে। তাই রাজনীতিতে নতুন কোনো মেরুকরণ হলে তারা নির্বাচনে যেতেও পারে।

সংবিধান অনুসারে বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে যে কোনো দিন পরবর্তী জাতীয় সংসদের নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসেবে ১ নভেম্বর থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত যে কোনো দিন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট হতে হবে। তাই নির্বাচন কমিশন সকল প্রস্তুতি শেষ করতে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তফসিলের আগে ৫ নভেম্বর বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে সিইসির নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন.নির্বাচন কমিশনের হাতে কোনো অপশন নেই। ইসিকে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অংশ হিসেবে যথাসময়ে নির্বাচন করতেই হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন অপশন থাকে। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেও পারে,আবার নাও করতে পারে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। তাই ইসি স্থির লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, মাত্র ৯০ দিন সময় হাতে থাকায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সকল প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে। ভোটগ্রহণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়সহ মাঠ পর্যায়ে পাঠানো শুরু হয়েছে।এর আগেই আঞ্চলিক,জেলা,উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসের নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় ইসি।

ব্যালট পেপারসহ আনুষঙ্গিক প্রচারপত্র ও ছাপার কাজ সরকারি মুদ্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন আছে। চলছে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের অ্যাপ তৈরির কাজও। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি একেবারে শেষ পর্যায়ে, এখন কেবল তফসিল ঘোষণাই বাকি। এ মাসের মধ্যভাগেই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে আলোচনা করতে ৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। বঙ্গভবন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তার আগে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সঙ্গে বুধবার ১ নভেম্বর সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনাররা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সোমবার সময় চেয়ে আবেদন জানায় নির্বাচন কমিশন। তারা ১ থেকে ৫ নভেম্বরের মধ্যে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিল। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি সচিবালয় আগামী ৫ নভেম্বর সময় দিয়েছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সভার আয়োজন করবে কমিশন।ওই সভায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত করা হতে পারে। একইসঙ্গে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্ধারণ করা হতে পারে। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে সিইসি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারেন।

সাধারণত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এ ধরনের সাক্ষাতের রেওয়াজ রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হচ্ছে ১ নভেম্বর। আগামি ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

নভেম্বর ১, ২০২৩
এজি

Share