Home / জাতীয় / রাজনীতি / ৭ নেতাকর্মীর পদত্যাগ : বিএনপির তৃণমূল কাউন্সিল নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ
৭ নেতাকর্মীর পদত্যাগ : বিএনপির তৃণমূল কাউন্সিল নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ

৭ নেতাকর্মীর পদত্যাগ : বিএনপির তৃণমূল কাউন্সিল নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ

রাজশাহী  মহানগরীতে শুরু হওয়া বিএনপির তৃণমূলের কাউন্সিল নিয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। ইতোমধ্যে কাউন্সিল ঘিরে অসন্তোষের কারণে নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন।

অভিযোগ উঠেছে, আত্মগোপনে থাকা মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র (সাময়িক বরখাস্ত) মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলপন্থিদের বাদ দিয়ে এসব ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে। এ কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু থেকেই ক্ষোভ বিরাজ করছিল। বুধবার রাজশাহী মহানগর কমিটির সহসভাপতি ও রাজপাড়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, মহানগর বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ভূঁইয়াসহ ৭ নেতাকর্মীর পদত্যাগ করেছেন। এ পদত্যাগের কারণে ক্ষোভের আগুন চাপা ছাইয়ের ভেতর থেকে বেরিয়ে পড়ল।

বুধবার পদত্যাগ করা বিএনপির অন্য নেতাকর্মীরা হলেন, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব সাঈদ টুকু, রাজপাড়া থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ পারভেজ পিন্টু, রাজপাড়া থানা বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাকলাইন, ২নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর আলী।

এ বিষয়ে রাজপাড়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (সদ্য পদত্যাগী) আলী হোসেন জানান, বিএনপি একটি বড় দল। এখানে একটি পদের জন্য অনেক প্রতিযোগী থাকবে। অনেক সময় কারো ইচ্ছের প্রতিফলন না ঘটতে পারে। বর্তমান কাউন্সিল নিয়ে তার ইচ্ছের প্রতিফলন না ঘটনায় তিনি স্বেচ্ছায় অন্যকে ছেড়ে দিয়ে সরে এসেছেন। তবে তিনি দলকে ভালোবাসেন। দলের প্রয়োজনে সবসময় পাশে থাকবেন।

বুলবুলপন্থিদের অভিযোগ, তড়িঘড়ি করে আয়োজন করা এসব কাউন্সিলের গণতন্ত্রের ন্যূনতম নিয়ম মানা হচ্ছে না। ঘরোয়াভাবে আয়োজন করে হাতেগোনা কয়েকজনকে ডাকা হচ্ছে কাউন্সিলে। যেখানে মেয়র বুলবুলপন্থিদের ডাকা হচ্ছে না।

বিএনপি’র তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আরো অভিযোগ করেন, কাউন্সিল হওয়ার আগে যে কমিটি বর্তমানে আছে তা ভেঙে দিতে হবে। এরপরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে। ওই আহ্বায়ক কমিটি সুন্দর কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করবে। কিন্তু বর্তমানে যেভাবে কাউন্সিলের মধ্যমে কমিটি হচ্ছে তা কোনো নিয়মকে তোয়াক্কা করছে না।

বুধবার মধ্য নগরীর ৯নং ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে বর্তমান সেক্রেটারি আক্তার সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু ওপর থেকে আগের সভাপতি বাদশাকে রাখতে নির্দেশ দেন। সে কারণে তৃণমূলে ক্ষোভ দেখা যায়। দলের কোনো পদেই থাকতে চাননি আক্তার। তবে, এ বিষয়ে আক্তার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদত্যাগ করা ওই ৭ বিএনপি নেতাকর্মীদের একজন জানান, যে পন্থায় কাউন্সিল করা হচ্ছে তাতে দলের অবস্থা আরো খারাপ হবে। এত বড় দলে এভাবে কমিটি হলে জনগণের ইচ্ছের প্রতিফলন ওই কমিটি দিয়ে হবে না। সেই ক্ষোভ থেকেই দল থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

তৃণমূল নেতাদের অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, মহানগরে যে কমিটি গঠন করা হবে তাতে নিশ্চিত সভাপতি মিজানুর রহমান মিনু। সে কারণে ভেতরে ক্ষোভ থাকালেও বাইরে কেউ প্রকাশ করতে সাহস পাচ্ছে না। এ কারণে দলের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকলে দল সামনে এগিয়ে যাওয়ার বদলে পিছিয়ে যাবে বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

এর আগে, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়।

এদিকে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক ৯ ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিনু। প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। এ ছাড়াও মহানগর বিএনপি’র নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়ার ১০ নং সাংগঠনিক ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে মোজাম্মেল হক, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে সেলু শেখ ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে মোসাদ্দেকুল রহমান লিটনকে। ১৬ নং ওয়ার্ডে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে দুলাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছেন শফিকুল ইসলাম শিমুলকে।

সূত্র : বাংলা মেইল

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০২:১০ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, বৃহস্পতিবার

এমআরআর