শেষ হলো পুলিশের জঙ্গিদমনে বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান। সপ্তাহব্যাপী চলা গণগ্রেফতার শুরু হয়েছিল গত ১০ জুন।
অভিযানে শেষ পর্যন্ত কত গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নিয়ে পুলিশ গত দুদিন আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য দেয়নি। তবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল আহছান লস এঞ্জেলেস টাইমসকে জানান, অভিযানে ১৪৫৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শেষ দিনে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জঙ্গি গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ পর্যন্ত ১৯৪ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । এবারের অভিযানে দুর্ধর্ষ কোনো জঙ্গি বা অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এর মধ্যে ৯ জন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি), ৭ জন হিজবুত তাহরির এবং একজন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের (এবিটি) সদস্য।
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ১টি পাইপগান, ১টি শাটারগান, ১ রাউন্ড গুলি, ২টি ককটেল, ১টি রামদা, ১টি চাপাতি ও ১৪টি উগ্রপন্থি বই উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সাত দিনের জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের মোট ১৯৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে ‘জঙ্গিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান’ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠেছে। প্রথমত, আগাম ঘোষণা নিয়ে এমন প্রক্রিয়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নজির নেই বললেই চলে। দ্বিতীয়ত, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গিয়ে অন্যান্য মামলায় ১২ সহস্রাধিক ব্যক্তিকে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ আছে, অনেক এলাকা থেকে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের সবাইকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
অনেকে থানা বা পুলিশের হেফাজত থেকে টাকার বিনিময়ে ‘উধাও হয়ে গেছে। এমনকি অনেককে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা মামলা ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঈদের আগে সাঁড়াশি অভিযানে কোনো কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ‘বাণিজ্য’ করার অভিযোগও উঠেছে।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে অনেক ওয়ারেন্ট তামিল হয়নি। অভিযানে অনেক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, সন্ত্রাসী, মলম ও অজ্ঞান পার্টির সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। তাই গ্রেপ্তারের সংখ্যাটি বড় দেখায়। তর দাবি, অভিযানে ৭৫ ভাগ সফলতা এসেছে। ছোটখাটো যেসব অভিযোগ এসেছে, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযান নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, সপ্তাহব্যাপী জঙ্গিবিরোধী অভিযানে পুলিশের অনেক সফলতা রয়েছে। জঙ্গি গ্রেপ্তারের পাশাপাশি উগ্রপন্থিদের মধ্যে ভীতিও তৈরি হয়েছে। তবে আপাতত এ অভিযানের মেয়াদ আর বাড়ছে বলে মনে হয় না।
গত ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
মিতু হত্যার তিন দিন পরই তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও জঙ্গি ধরতে বিশেষ অভিযানের ঘোষণা দেয় পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।(সময়ের কণ্ঠসর)
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ৬:২৯ পিএম,১৭ জুন ২০১৬,শুক্রবার
এইউ