৬ উইকেটে ২২৮ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে। ভালো-মন্দ মিলিয়ে। নাঈম হাসানের বলে তিনটি ক্যাচ ফসকানোর আক্ষেপ। ক্রেগ আরভিনের সেঞ্চুরি। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক অপরাজিত থেকে দিন শেষ করলে হতাশাটা বেশি হতো। ‘গলার কাঁটা’ হয়ে থাকা আরভিনকে দারুণ এক ডেলিভারিতে নাঈম হাসান তুলে নেন শেষ বিকেলে। এতে অন্তত দেরিতে হলেও কিছুটা এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডও বলছে, প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সকে অন্তত খুব বাজে বলার উপায় নেই।
রেজিস চাকাভা এক প্রান্ত ধরে রাখায় কিছুটা অস্বস্তি থাকেই। সাতে নামা চাকাভা একমাত্র টেস্ট সেঞ্চুরি করেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষেই। অন্য প্রান্তে ব্যাটিং অর্ডারের ‘লেজ’ বেরিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ের। পেসার ডোনাল্ড তিরিপানো আছেন অন্য প্রান্তে। দিনের সবচেয়ে সফল বোলার নাঈম হাসান। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম দিনের সবুজাভ উইকেটে বাঁক পেয়েছেন এ অফ স্পিনার। ৬৮ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। ৫১ রানে ২ উইকেট আবু জায়েদের।
প্রথম সেশনে শুধু কেভিন কাসুজাকে তুলে নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে ওপেনারকে নাঈমের ক্যাচে পরিণত করেন আবু জায়েদ। উইকেটে থাকা হালকা ঘাসের সুবিধাটা সকাল সকালই তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন ইবাতদ হোসেন-আবু জায়েদ। প্রথম সেশনে উইকেট বেশি না পড়লেও জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে রেখেছিলেন দুই পেসার। নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথে বল করেন দুজন।
প্রথম সেশনে ১ উইকেটে ৮০ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় সেশনেও বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন নাঈম। তাঁর বলে তিনটি ক্যাচ দিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ে ওপেনার প্রিন্স মাসভোরে। নাঈম নিজেও তাঁর একটি ক্যাচ ফসকেছেন। একটি ক্যাচ ছেড়েছেন নাজমুল হোসেন। শেষ পর্যন্ত এই নাঈমই ৬৪ রান করা মাসভোরেকে ফিরিয়েছেন। পরের ওভারেই তাঁকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে স্টাম্পে বল টেনে এনেছেন ব্রেন্ডন টেলর (১০)।
দ্বিতীয় উইকেটে মাসভোরের সঙ্গে ১১১ রানের জুটি গড়া আরভিন খেলেছেন সাহসী ক্রিকেট। টেস্টে তাঁর এতটা ঝুঁকি নেওয়া প্রশ্ন তোলার মতো। তবে বারবার তাঁর রিভার্স সুইপ করার চেষ্টা বাংলাদেশের স্পিনারদের জেঁকে বসতে দেয়নি। ২২৭ বলে ১০৭ রান করা আরভিন নাঈমের শিকার হন দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগের ওভারে। ভেতরে ঢোকানো বলে এ বাঁহাতিকে বোল্ড করেন নাঈম। আরো পড়ুন- জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশের দল ঘোষণা
দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ ২টি উইকেট পেয়েছে নাঈমের কল্যাণে। শেষ সেশনে এসে মূলত বেশি সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন সেশন বিচার করলে উইকেট পড়ার ক্রম দাঁড়ায়, এক, দুই, তিন! মানে প্রথম সেশনে ১ উইকেট, দ্বিতীয় সেশনে ২ উইকেট আর তৃতীয় সেশনে এসে পড়েছে ৩ উইকেট। এই ৩ উইকেটের মধ্যে একটি আবু জায়েদের, বাকি দুটি নাঈমের। প্রথম সেশনের তুলনায় শেষ দুই সেশনে রান উঠেছে কম—৮০, ৭০ ও ৭৮।
নাঈম উইকেটে বাঁক ও বাউন্স পাওয়ায় তাঁকে দিয়েই আজ বেশি বল করিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। ৩৬ ওভার বল করেন তিনি। গড়ে ১.৮৮ রান দেওয়াই বলে দেয় কতটা ভালো বল করেছেন এ স্পিনার। ২১ ওভার বল করে উইকেটশূন্য তাইজুল ইসলাম। ১৭ ওভার বল করেছেন ইবাদত, আবু জায়েদ ১৬ ওভার। চার ‘বিশেষজ্ঞ’ বোলার নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশ সারা দিন এ চারজন দিয়েই বল করিয়েছে। কোনো ‘পার্ট-টাইম’ বোলারকে দেখা যায়নি।
বার্তা কক্ষ, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০