Home / শিক্ষাঙ্গন / বিতর্কিত কারিকুলামের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির বই বাতিল
nctb

বিতর্কিত কারিকুলামের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির বই বাতিল

বিতর্কিত কারিকুলামের মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির আগের সব বই বাতিল করা হয়েছে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা ২০১২ সালের কারিকুলামের আলোকে পরিমার্জিত বা সংশোধিত বই হাতে পাবে। অন্য দিকে প্রাথমিকের প্রথম,দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামের যে বই হাতে পাবে সেখানেও থাকছে পরিবর্তন। তবে এ তিন শ্রেণির মধ্যে শুধু তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে নতুন করে যুক্ত হয়েছে প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে প্রশ্ন বা অনুশীলনী। অন্য দিকে চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবই যেহেতু এখনো নতুন কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত হয়নি তাই এ দু শ্রেণির পাঠ্যবই ২০১১ সালের কারিকুলামের আলোকেই পরিমার্জিত আকারে শিক্ষার্থীরা হাতে পাবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সূত্র জানায়,পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শিক্ষাকাঠামোকে ধ্বংস করতে ২০২২ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শ্রেণিতেই বিতর্কিত কারিকুলামের নতুন পাঠ্যবই চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করে। প্রথমে ২০২২ সালে মাধ্যমিকে ষষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি নতুন কারিকুলাম চালু করা হয়। এরপর ২০২৩ সালে সপ্তম শ্রেণি এবং প্রাথমিকের দ্বিতীয় শ্রেণিতে চালু করা হয় নতুন কারিকুলাম।

পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে মাধ্যমিকে অষ্টম, নবম এবং প্রাথমিকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতেও নতুন কারিকুলাম চালু করা হয়। সবমিলিয়ে তিন বছরের ব্যবধানে প্রাথমিকের প্রথম,দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণী আর মাধ্যমিকে ষষ্ঠ থেকে নবম পর্যন্ত নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবই চালু করা হয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ক্ষমতা ছেড়ে পলায়নের পর জন-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন এবং জনদাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিতর্কিত কারিকুলাম বাতিল ঘোষণা করে প্রফেসর ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এ দিকে বিতর্কিত কারিকুলাম বাতিল ঘোষণার পর নতুন করে পাঠ্যবইয়ের কারিকুলাম বা পরিমার্জনের কাজ শুরু করেছে এনসিটিবি। পাঠ্যবই ছাপার আগের বেশ কয়েকটি টেন্ডার বাতিল করে পুনরায় টেন্ডারও আহ্বান করা হয়েছে। সেই আলোকেই এখন কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার সরকারি ছুটির দিনেও এনসিটিবিতে গিয়ে দেখা গেছে, চেয়ারম্যানসহ বেশির ভাগ কর্মকর্তাই অফিস করছেন। বিশেষ করে নতুন বছরের শুরুর দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়াকে এনসিটিবি এখন চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। তাই সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার,শনিবারও বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা অফিস করছেন।

এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মদ ফাতিহুল কাদীর জানান আগের কারিকুলামের বই যেভাবে লেখা হয়েছে বা সম্পাদনা করা হয়েছে সেগুলো ভুলে ভরা। তথ্য-তত্ত্ব এবং বানানে রয়েছে হাজারো ভুল। এগুলো শিক্ষার্থীদের পাঠের উপযোগী ছিল না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আমরা চেষ্টা করছি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বইয়ের সফট কপি বা সিডি প্রেসে পাঠাতে পারব। তাই ছুটির দিনেও আমরা কাজ করছি। রোববারের মধ্যে প্রাথমিকের প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির বই-ই সফট কপি প্রেসে পাঠানো যাবে। এরপর কাল সোমবার তৃতীয় শ্রেণির বইয়ের সফট কপিও দেয়া হবে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.রিয়াজুল হাসান গতকাল শনিবারও অফিস করেছেন। তিনি নয়া দিগন্তের এ প্রতিবেদককে জানান,বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমরা কাজ করছি। বিশেষ করে এনসিটিবির প্রত্যেক বিভাগের প্রধানদের সেভাবেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন,এ বছর এক দিকে যেমন নতুন পাঠ্যবই ছাপতে সময়ের একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে তেমনি পাঠ্যবইয়ের মান নিশ্চিত করার বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। আশা করছি সবকিছু ঠিক থাকলে বাকি কাজও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট
২৭ অক্টোবর ২০২৪
এজি