ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বাহাদুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঁচজন শিক্ষার্থীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরপর থেকে ওই দুই শ্রেণির ক্লাস বন্ধ রেখেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কলোনি এলাকার ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. ফারহানা পারভীন এ তথ্য জানান।
গত ২০ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির দুই জন ও পঞ্চম শ্রেণির তিন জন ছাত্রীর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে তাদের ফলাফল পজিটিভ আসে। তারা ঠাকুরগাঁও সরকারি শিশু পরিবার বালিকার সদস্য।
প্রধান শিক্ষক ফারহানা পারভীন বলেন, বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৪২৬ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তাদের মধ্যে চতুর্থ শ্রেণিতে রয়েছে ৮৪ জন ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৭৬ জন। গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যালয় খোলার পর শিডিউল অনুযায়ী প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নেওয়া হয়। বিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করে ক্লাসে প্রবেশ করানো হয়।
তিনি আরও বলেন, করোনা আক্রান্ত পাঁচ ছাত্রী গত ১৬ সেপ্টেম্বর ক্লাসে উপস্থিত ছিল। কিন্তু সেদিন তাদের মধ্যে করোনার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। বিদ্যালয় থেকে যাওয়ার পর ঠাকুরগাঁও সরকারি শিশু পরিবার বালিকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে খোঁজ-খবর নেওয়া হয় ছাত্রীদের। এসময় সরকারি শিশু পরিবার বালিকা কর্তৃপক্ষ জানায় তাদের ওখানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছে। এরপর থেকে আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর রাখতে শুরু করি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মমতাজ ফেরদৌস বলেন, বাহাদুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচজন ছাত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়। এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আগামী এক সপ্তাহের জন্য ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. রকিবুল আলম চয়ন বলেন, সরকারি শিশু পরিবার বালিকার ১৩ জন ছাত্রীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদেরকে আলাদাভাবে আইসোলেশনে রেখেছি। এর পাশাপাশি আক্রান্তের দিন থেকেই আমরা তাদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। তারা বর্তমানে সুস্থ আছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলার প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। আমরা বিদ্যালয়ে সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। স্কুলে আশা শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাণ করা হচ্ছে। যদি কোনও শিক্ষার্থীর করোনার লক্ষণ দেওয়া যায় তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তার নমুনা পরীক্ষা করছি।
তিনি বলেন, যেসব বিদ্যালয়ের শ্রেণির শিক্ষার্থীরা করোনা আক্রান্ত হয়েছে, আমরা তাৎক্ষণিক সেসব শ্রেণির ক্লাস বন্ধ রেখেছি এবং তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur