চাঁদপুর টাইমস, ইসলাম ডেস্ক :
৩ রমজান আজ। মুমিনের ইনসানে কামিল বা পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার সুবর্ণ সময়ের আরও একটি দিন গত হলো আমাদের কাছ থেকে। নিজের মনের আয়নায় নিজেকে একবার দেখে নেয়া দরকার। রহমতের বরিষায় সিক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকে সিয়ামগুলো যাতে ঠিকমতো পরিপালন করা যায় সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করা দরকার। এই সেই মাস যে মাসে নাজিল হয়েছে পবিত্র আল কুরআন। আল্লাহ বলেন, “আমি মানুষের হেদায়েতের জন্য পথ নির্দেশনার বিস্তারিত বর্ণনাসহ সত্য মিথ্যার মাপকাঠি হিসাবে এই রমজান মাসেই কুরআন নাজিল করেছি”।
সুতরাং এ মাসে কুরআনের শামিয়ানায় প্রয়োজন নিজেকে সামিল করা। মানুষ যেখানে তার মুক্তির পথ হারিয়ে হয়রান, মহামুক্তির পথ বাতলে দেয় পবিত্র আল কুরআন। এটাকে না বোঝার ভয়, না ছোঁয়ার ভীতি এমনভাবে আমাদের পেয়ে বসেছে যেন ছুলে এটি কিনা কি হয়ে যাবে। হ্যাঁ, কুরআন ছুঁইলে একটি ঘটনা-ই ঘটবে তা হচ্ছে-সোনার মানুষ হওয়ার অমিত সম্ভাবনা। আসুন এই রমজানে সে সম্ভাবনাকে কাজে লাগায়। বয়ান আমরা কম শুনছি না। কাজের কাজ কিচ্ছু হচ্ছে না। আসুন এবার তাহলে একটা কাজ করি বাংলা অনুবাদসহ ভাল একটা কুরআন সংগ্রহ করে পড়তে থাকি। মাসজুড়ে যতটুকু পারা যায় সময়টাকে কাজে লাগান। বাংলা ভাষায় যে কাজটা আমরা পারিনি তা করে দেখালেন গিরীশ চন্দ্র সেন পবিত্র কুরআনের বাংলা অনুবাদ করে। তার হাতেই প্রথম রচিত হয়েছিল মহানবীর [সা.] জীবন চরিত। যে কাজ আমরা পারিনি তা করে দেখালেন রামপ্রাণ গুপ্ত, কৃষ্ণকুমার মিত্র, হরেন্দ্র চন্দ্র মণ্ডলরা। সামগ্রিক ব্যর্থতাকে ঝেড়ে ইবাদতের এই মৌসুমে সুযোগটিকে আসুন কাজে লাগায় কী লেখা আছে কুরআনে- একবার পড়ে দেখি। কি সেই আকর্ষণ যার কারণে বুনো মানুষেরা সোনার মানুষে পরিণত হলো। কুরআনের অলৌকিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে একবার এটি পাঠ করে দেখুন না সকলে। শুধু ঘরে উঁচু স্থানে তুলে রাখার মধ্যে কোনো ফজিলত নেই। কুরআনের হক হলো— এটাকে অনুধাবন করা।
মসজিদে খতম তারাবীহতে হাফেজ সাহেবের পিছনে দঁড়িয়ে আমরা এই কুরআন শুনছি। যদি এর মানে জানা থাকতো কতই না ভাল লাগতো তা।
প্রিয় পাঠক, এ মাসটাকে কাজে লাগানোর ব্যাপারে মুফতীয়ে আজম হজরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শফী (রহ.) বলতেন, রমজানকে স্বাগত জানানো এবং রমজানের প্রস্তুতির পদ্ধতি হলো এই যে, মানুষ প্রথমে চিন্তা করবে এ মাসে তার ব্যবসা-বাণিজ্য এবং তার দৈনিক অন্যান্য কর্মকাণ্ডের মধ্যে কোনটি স্থগিত করা যায়। যেসব কর্মকাণ্ড স্থগিত করা সম্ভব হয় সেগুলো রমজান মাসে স্থগিত করে নেবে। এর মাধ্যমে যে সময়টুকু বের হয়ে আসবে তা একমাত্র ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে কাটিয়ে দেবে।
এ মাসে রোজা তো রাখতেই হবে আর তারাবীহর নামাজও আদায় করতেই হবে। এছাড়া যতদূর সম্ভব নিজের সময় ইবাদত বন্দেগীতে অতিবাহিত করবে। এ মাসে কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করবে। কেননা রমজান মাসের সঙ্গে কুরআনের একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং অধিকহারে কুরআন তিলাওয়াত করবে।
হজরত ইমাম আবু হানিফা (রহ.) রমজান মাসে দৈনিক দিনের বেলায় এক খতম এবং রাতের বেলায় এক খতম কুরআন তিলাওয়াত করতেন। এছাড়া তারাবীহর নামাজে তিনি এক খতম কুরআন তিলাওয়াত করতেন। এভাবে তিনি এক রমজানেই ৬১ বার কুরআন খতম করতেন। বড় বড় বুজুর্গানে দ্বীনের জীবনী অনুসন্ধান করলেও দেখা যায়, রমজানে তারা কুরআন তিলাওয়াতে বেশ গুরুত্বারোপ করেছেন। সুতরাং আমাদের জন্যও জরুরি অন্যান্য সময়ের তুলনায় রমজান মাসে কুরআন তিলাওয়াতের পরিমাণ বৃদ্ধি করে দেয়া।
আপডেট: বাংলাদেশ সময় ০৩:৫২ অপরাহ্ন, ২১ জুন ২০১৫, রোববার
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম-এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।