ঝিনাইদহে দুই ভোটে পরাজিত এক মেম্বার (সদস্য) প্রার্থীর ভোট পুনরায় গণনা বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে বিচারপতি এম মোয়াজ্জেম হোসেন ও বিচারপতি মোহাম্মদ বদরুজ্জামানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রুলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসারকে বিবাদী করা হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনা ১৩ জুন হাইকোর্টে রিট করেন।
বুধবার রিটের শুনানি করেন ব্যারিস্টার মুনতাসির উদ্দীন আহমেদ ও আইনজীবী অজিত শীল।
এছাড়া হাইকোর্ট ওই প্রার্থীর অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষিত প্রার্থী মো. রবিউল ইসলামের গেজেট স্থগিত রাখার নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আইনজীবী অজিত শীল বলেন, ‘প্রার্থীর পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণাদি আছে। হাইকোর্ট সে প্রমাণ অনুযায়ী নির্দেশনা দিয়েছেন। আশা করি ন্যায়বিচার মিলবে।’
সুপ্রিম কোটের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুনতাসির আহমেদ বলেন, ‘হাইকোর্ট রুল নিশি জারি করেছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে প্রার্থীর অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন পাশাপাশি গেজেট স্থগিত করেছেন। প্রার্থী যাতে ন্যায়বিচার পান সে জন্য আইনি প্রক্রিয়ায় সকল ধাপ মোকাবিলা করা হবে। আশা করি রায় আমাদের অনুকূলেই থাকবে।’
গত ২৮ মে ঝিনাইদহের মধুহাটি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কেন্দ্রের ভোট গণনায় প্রিসাইডিং অফিসার অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ করেন পরাজিত প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনা।
এ বিষয়ে তিনি ৩১ মে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার কমিশনার, কমিশনের সচিব, রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক এ এইচ এম হুমায়ুন কবির একবার ভোট গণনা করেই তড়িঘড়ি করে কেন্দ্র ত্যাগ করেন। তার পোলিং এজেন্ট আলতাফ হোসেন ভোট পুনরায় গণনা করতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অনুরোধ করলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. রবিউল ইসলামের (তালা প্রতীক) পক্ষ নিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন-এমন অভিযোগ ভ্যানগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনার। গত ১ জুন ঝিনাইদহ জেলা প্রেস ক্লাবে প্রিজাইডিং অফিসারের অনিয়ম উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন দুই ভোটে পরাজিত ওই প্রার্থী।
রুলের বিষয়ে ঝিনাইদহ উপজেলা কৃষি অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘হাইকোর্ট যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবেই সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।’
প্রিজাইডিং অফিসার এ এইচ এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘যতো তাড়াতাড়ি বিষয়টির মীমাংসা হয় ততই ভালো। আমরা হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করব।’
প্রতিবেদক- জাহিদুর রহমান তারেক, ঝিনাইদহ করেসপন্ডেন্ট