সারাদেশ

২৩ মাসেও শনাক্ত হয়নি তনুর হত্যাকারী

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলার ২৩ মাস পূর্ণ হয়েছে। আগামী ২০ মার্চ হত্যার দুই বছর পূর্ণ হবে। দীর্ঘ ২৩ মাসেও তনুর খুনিরা শনাক্ত হয়নি এবং মামলার উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতিও নেই। খুনি চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার এবং কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা। তনুর পরিবার সন্দেহভাজন আসামিদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, দফায় দফায় অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আস্তে আস্তে জিজ্ঞাসাবাদের পরিসর ছোট করে আনা হচ্ছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে অপরাধীদের শনাক্ত করা হবে বলেও তিনি জানান।

তনুর পরিবারের সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফিরেনি তনু। পরে তার স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পায় স্বজনরা। পরদিন তার বাবা ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবি’র পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুষ্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। গত বছরের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রানু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা- এ নিয়েও সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না।

সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা আসামি বলেও সিআইডি জানায়। তবে তাদের নাম জানানো হয়নি।

এদিকে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা সিআইডি কার্যালয়ে বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, চাচাতো বোন লাইজু ও চাচাতো ভাই মিনহাজকে দিনভর পুরানো বিষয়গুলো জিজ্ঞাসা করেন ঢাকা সিআইডির কর্মকর্তারা।

গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আনাম রায়হান জানান, তনু হত্যার মামলাটি দীর্ঘদিন সিআইডিতে পড়ে আছে, মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। সিআইডির গা-ছাড়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, দু’জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকারীকে জানা যাবে। সিআইডি একে ওকে জিজ্ঞাসার নামে শুধু শুধু সময় ক্ষেপণ করছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, তাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। গত দুইমাস পূর্বে তনুর মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের পরে মামলার স্বার্থে পুনরায় আরো অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আস্তে আস্তে জিজ্ঞাসাবাদের পরিসর ছোট করে আনা হচ্ছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে অপরাধীদের শনাক্ত করা হবে বলেও তিনি জানান। (বিডি-প্রতিদিন)

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২:৩৫ পি.এম ২৮ ফেব্রুয়ারি২০১৮বুধবার
কে এইচ

Share