দেশের ২৩৫টি পৌরসভায় ভোট আয়োজনে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের হিসাব ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন, যা পাঁচ বছর আগে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নির্বাচনের চেয়ে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা বেশি।
কমিশনের উপ-সচিব (নির্বাচন পরিচালনা-১) মো. সাজাহান জানান, এই খরচের মধ্যে নির্বাচন পরিচালনায় যাবে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় খরচ ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা।
বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “১০০ কোটি টাকা ব্যয় নির্বাহের বিষয়টি ইসির অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। শিগগিরই তাতে সম্মতি আসবে। আগামী সপ্তাহে অর্থছাড় করে সংশ্লিষ্টদের কাছে পর্যায়ক্রমে পাঠানো হবে।”
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচন পরিচালনায় প্রায় ৬৪ খাতে ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, নির্বাহী-বিচারিক হাকিমের বরাদ্দ, ভোটকেন্দ্র-ভোটকক্ষ স্থাপন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভাতা, নির্বাচনী সামগ্রী কেনা-পরিবহন, ব্যালট পেপার মুদ্রণসহ নানা খাত রয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন পরিচালনায় খাতভিত্তিক ব্যয়ে মোট ৪৪ কোটি ৯২ লাখ ৪১ হাজার ৫০০ টাকা প্রয়োজন হতে পারে। আর বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্যে ৫৫ কোটি ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকা প্রয়োজন হবে।
চলতি অর্থবছরে কমিশনের হাতে থাকা ৩১৬ কোটি টাকা থেকে ব্যয় হবে এ অর্থ।
কমিশনের বাজেট শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এনামুল হক বলেন, “বরাবরই নির্বাচন পরিচালনার চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা খাতে ব্যয় বেশি হয়। নির্ধারিত বরাদ্দের কম-বেশি ব্যয় হতে পারে। এখন পর্যন্ত ২৩৫টি পৌরসভায় ভোটের কথা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত বরাদ্দের বেশি ব্যয় হলে সঙ্কুলানে অসুবিধা হবে না।”
আইন-শৃঙ্খলা খাতে পৌরসভা প্রতি ২০ লাখ টাকার বেশি ব্যয় হতে পারে বলে ধারণা তার।
নির্বাচন কমিশনের একজন উপ সচিব জানান, আগামী ১৯ ডিসেম্বর কমিশনের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ ব্যক্তি, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে।
ওই বৈঠকের পর কেন্দ্রভিত্তিক কতজন নিরাপত্তা সদস্য থাকবেন, তারা মাঠে কতদিন থাকবেন এবং কি পরিমাণ সদস্য নিয়োজিত করা হবে- এসব বিষয় চূড়ান্ত করা হবে।
অতীতের মতো এবারও পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার, এপিবিএন, কোস্টগার্ড ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবে। সেই হিসাবেই ব্যয়ের হিসাব ধরা হয়েছে। পৌর নির্বাচনে সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করে না।
তবে ঊপকূলীয় এলাকার কোনো পৌরসভায় সীমিত আকারে নৌবাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রাখার সিদ্ধান্ত হলে ব্যয় বাড়তে পারে।
নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর নির্বাহী হাকিম নিয়োগ করা হতে পারে। সেই সঙ্গে ভোটের আগে-পরে মিলিয়ে চারদিনের জন্য (২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর) আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী নিয়োজিত রাখা হতে পারে বলে জানিয়েছেন কমিশনের একজন কর্মকর্তা।
প্রেসে যাচ্ছে ভোটকেন্দ্রের তালিকা
নির্বাচন কমিশন ২৩৫টি পৌরসভার জন্য স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে তিন হাজার ৫৭৩টি ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। তালিকার গেজেট ছাপানোর বৃহস্পতিবার তা প্রেসে পাঠানো হচ্ছে।
কমিশনের উপ-সচিব আবদুল অদুদ বলেন, “সবকিছু গুছিয়ে ফেলেছি আমরা। শুক্রবার গেজেট প্রকাশের শেষ সময়। ওই দিন বন্ধ থাকায় ভোটকেন্দ্রের তালিকা গেজেটে প্রকাশের জন্য বৃহস্পতিবারই প্রেসে পাঠিয়ে দেব।”
ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে কেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকার গেজেট প্রকাশের বিধান রয়েছে।
সংসদ নির্বাচনে প্রতি আড়াই হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র করার কথা রয়েছে। পৌরসভায় ভোটকেন্দ্রের নীতিমালা সংশোধন করে দুই হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র করতে হয়েছে।
ফলে এসব পৌরসভায় সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনের চেয়ে অন্তত ৩০০টি কেন্দ্র বেড়েছে।
“নীতিমালা মেনে ভোটার অনুপাতে প্রতি ওয়ার্ডে সাধারণত একটি করে কেন্দ্র থাকছে। বেশি ভোটার বেড়েছে বা কিছুটা বড় পৌরসভায় কেন্দ্র আগের চেয়ে বেড়েছে,” বলেন উপ-সচিব অদুদ।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট : ১১:৪৪ এএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur