২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আতিক সন্তানদের সরকারি চাকরির দাবি

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিউনিতে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পাচআনী গ্রামের আতিকুর রহমান। ৪ সন্তান নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন আতিকের বিধবা স্ত্রী লাইলী বেগম (৫২)।

চার সন্তান নিয়ে দুঃখে-কষ্টে সংসার চালাচ্ছেন আতিকের বিধবা স্ত্রী লাইলী বেগম (৫৪)। তাই সন্তানদের সরকারি চাকরির দাবী করছেন আতিকের স্ত্রী। তার পরিবার হামলাকারীদের সর্বোচ্চ দাবি করেন।

আতিকের চার সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে তানিয়া আক্তারের (২৫) আর্থিক দৈন্যদশার জন্য এইচএসসি পাসের পর লেখাপড়া থেমে যায়। ফলে তিন বছর আগে তার বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে মিথুন (২৪)। চাকরি করার কারণে উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএ পরালেখা করছে। পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করে সংসার চালায়। মেজ ছেলে মিন্টু (২২) অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে এখন রাজমিস্তীর কাজ করে। তাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। সে বাড়িতে থাকে। ছোট ছেলে শাকিব (১৬) এবার এইচএসসিতে পরে।

শনিবার (২০ আগস্ট) বিকালে সরেজমিন ২১ আগস্ট রনিহত চাঁদপুরের মতলবের আতিকের বাড়ি পাঁচআনীতে গিয়ে দেখা যায়, চৌ-চালা ঘরে তার স্ত্রী লাইলী বেগম চার সন্তান নিয়ে থাকেন।

লাইলী জানান, ২১ আগস্ট আসলেই সাংবাদিকরা খোঁজ-খবর নেন। এ ছাড়া আর কেউ এই পরিবারের খোঁজ-খবর নেন না।

আতিকুর রহমানের বড় ছেলে মিথুন বলেন, আমাদের পরিবারে এখন একটি চাকরির প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের ভাই-বোনের চাকরির ব্যবস্থা করতেন তাহলে আমরা একটু স্বচ্ছলভাবে জীবনযাপন করতে পারতাম।

আতিকের স্ত্রী লাইলী বেগম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে ১ লাখ, তারপর সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ, এফডিআর-এর জন্য ২০ লাখ এবং নগদ ৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এ ছাড়া আর কোনো সাহায্য আমরা পাইনি।

আমার স্বামীর হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানাই। আর যেন কোনো স্ত্রীর তার স্বামীকে অল্প বয়সে হারাতে না হয়।

মোহনপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শাহিন চৌধুরী বলেন,১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশের আরো একটি কলঙ্কিত অধ্যায়ের নাম বিভীষিকাময় ২১ শে আগষ্ট। সেদিন রক্তগঙ্গায় ভেসেছিলো বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কালো রাজপথ, আর্তনাদ আর আহাজারিতে স্তব্ধ হয়েছিলো পুরো বাংলাদেশ। জীবনের বিনিময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সেদিন মতলবের মাটি ও মানুষের নেতা, আধুনিক মতলবের রুপকার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বৃহত্তর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাবেক শ্রদ্ধাভাজন প্রয়াত মেয়র হানিফ ভাইসহ আগলে রেখেছিলেন আত্মত্যাগকারী অকুতোভয় নেতা-কর্মীর দল। ২১শে আগস্টের ভয়াল থাবায় জীবনদানকারী আইভী রহমানসহ নিহত সকল শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আমি গ্রেনেড হামলায় নিহত সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

উল্লেখ্য, আতিকুর রহমান ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ঢালাই শ্রমিকের কাজ করতেন। শ্রমিকলীগের সদস্য হিসেবে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি যোগদান করেছিলেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেদিন তাকে জীবন দিতে হয়েছিল ঘাতকদের গ্রেনেড হামলায়।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ২০ আগস্ট ২০২২

Share