২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্যে চাঁদপুরে প্রাথমিক-মাধ্যমিকে বইয়ের চাহিদা ৫৪ লাখ ৩৩ হাজার ৮শ’

চাঁদপুর ৮ উপজেলার ২শ ৯৩টি সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল, ২শ ১ টি দাখিল- এবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং এসএসসি ভোকেশনালে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্যে ৪১ লাখ ৭৪ হাজার ৪ শ ১৭ কপি এবং জেলার ৮ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্যে ১২ লাখ ৫৯ হাজার ৪শ ৪৫ কপি বইয়ের চাহিদা গণ ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে ইতোমধ্যেই প্রেরণ করা হয়েছে। বইয়ের চাহিদা ইতোমধ্যেই শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। মাধ্যমিকের এ বই বিতরণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে উপজেলাগুলোর স্ব-স্ব গুদামে প্রেরণ করা হবে। চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের বই প্রতি উপজেলার প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করপব স্ব-স্ব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারগণ।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস চাঁদপুরে বই বিতরণে দায়িত্ব প্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা চাঁদপুর টাইমসকে ২৭ অক্টোবর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, জেলায় ৮ উপজেলায় মাধ্যমিক স্তরের ৪১ লাখ ৭৪ হাজার ৪’শ ১৭ কপি। কচুয়ায ৬ লাখ ৪৯ হাজার ১শ ২০ কপি, চাঁদপুর সদরে ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৮শ ৩২ কপি, ফরিদগঞ্জে ৭ লাখ ৮০ হাজার ৫ শ ২৬ কপি, মতলব উত্তরে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৮শ ৩২ কপি,মতলব দক্ষিণে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৮শ কপি, শাহরাস্তি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৩ শ ৭০ কপি, হাইমচরে ২ লাখ ১ হাজার ৪ শ ৪২ কপি এবং হাজীগঞ্জে ৫ লাখ ৯৫ হাজার ৪শ ৬৫ কপি বইয়ের চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে করা হয়েছে বলে সূত্রটি জানায়। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের বই বিতরণকারী কর্মকর্তা’র টাইমসকে জানান,‘ বই ও বিতরণাদেশ সংক্রান্ত চিটি এখনও এসে পৌঁছেনি। ’ জেলায় এসএসসি ভোকেশনাল, দাখিল ভোকেশনাল ও ইংরেজি ভার্সনের ৯৪ হাজার কপি বইয়ের চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে ।

প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই প্রদানের জন্যে এ চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে । চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানা গেছে । প্রাপ্ত তথ্য মতে, চাঁদপুর জেলায় ৮ প্রকারের ১ হাজার ১শ ৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১ শ’৫৬ টিই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। চাঁদপুরে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সংখ্যা ৫শ ৫৫ টি এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার। সে মতে, চাঁদপুর সদরে সকল শ্রেণির ২ লাখ ৪১ হাজার ৫শ কপি, হাজীগঞ্জে ১ লাখ ৭১ হাজার ৩শ ১৮ কপি, শাহরাস্তিতে ১ লাখ ২৯ হাজার ২শ ১৯ কপি, মতলব উত্তরে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮শ ৫০ কপি, মতলব দক্ষিণে ১ লাখ ২০ হাজার ৩শ ৩০ কপি, ফরিদগঞ্জে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬শ ৮৭ কপি, হাইমচরে ৬৩ হাজার ৬শ কপি এবং কচুয়ায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯শ ২০ কপি বইয়ের চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।

চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সিনিয়র উচ্চমান সহকারী বলেন,‘নভেম্বরের মধ্যে সকল চাহিদাকৃত বই চাঁদপুরে এসে পৌঁছবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে স্ব-স্ব উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে জেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছানো হবে। বিভাগীয় নির্দেশনা মতেই বার্ষিক পরীক্ষা পরীক্ষার পদক্ষেপ নেয়া হবে। সরকারি আদেশ পাওযা গেলে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও একই ভাবে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীগণের বই বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে বলে জানা যায় ।

এদিকে কালের কন্ঠের এক সংবাদে জানা যায় – প্রতিবছর সাধারণত জুলাই-আগস্ট থেকে পাঠ্য বই ছাপার কাজ পুরোদমে শুরু হয়। এর পরও ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ বই দেয়া সম্ভব হয় না। এবার অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় চলে এলেও একটি বই ছাপার কাজও শুরু হয়নি। যেভাবে কাজ এগোচ্ছে তাতে আগামি নভেম্বরের মধ্যেই ছাপানোর কাজ চলছে। আগামি দু’ মাসে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য সাড়ে ৩৭ কোটি পাঠ্য বই ছাপার চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে। এবার সব কাজ একসঙ্গে দেয়া হচ্ছে। আর সময় কমিয়ে মাত্র ৪৫ দিন করা হচ্ছে। ফলে এ সময়ের মধ্যে শতভাগ বই দেয়া দু:সাধ্য।

এনসিটিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩৭ কোটি ৬৪ লাখ পাঠ্য বই ছাপানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যে প্রাথমিকের বই ৯ কোটি ২১ লাখ। মাধ্যমিকের ২৮ কোটির কিছু বেশি। যার মধ্যে ক্ষুদ্র ন-ৃগোষ্ঠীর বই ছাপানো হবে ১ লাখ ৯২ হাজার ৮ শ ২৫টি। মাদরাসার দাখিল পর্যায়ের ৩ কোটি ৩৬ লাখ ও দাখিল ভোকেশনালে ১ কোটি ৯২ লাখ। এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়,আগামি বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যার খুব একটা পরিবর্তন না হলেও বইয়ের সংখ্যা বেড়েছে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত আগে বই ছিল ১৪ টি করে। পুরনো শিক্ষাক্রমে ফেরত যাওয়ায় আগামি বছর এসব শ্রেণির ২২টি করে বই ছাপাতে হবে। কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, শারীরিক শিক্ষাসহ বেশ কয়েকটি বই এবার নতুন করে যাবে। আবার যেহেতু বিভাগ বিভাজন ফিরছে,সে কারণে দশম শ্রেণিতে নতুন বই দিতে হবে। ফলে নবম-দশম শ্রেণির জন্য ৩৩টির মতো বই ছাপাতে হবে। এতে সব মিলিয়ে আগামি শিক্ষাবর্ষে আড়াই কোটির মতো বই বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রক ও বিপণন সমিতির সভাপতি জানিয়েছেন,‘ এনসিটিবিকে বাংলা,ইংরেজি,গণিতের মতো বইগুলো আগে দিতে। এরপর অন্য বইগুলো সরবরাহ করতে। কারণ এবার চাপ পড়বে একসঙ্গে। আর ৭২ দিনের সময় হচ্ছে ৪৫ দিন। ফলে ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই দিতে চাইলে কেউ পারবে না। আমার মনে হয়-বর্তমানে এনসিটিবির কর্মকর্তারা আন্তরিক।

আবদুল গনি
৫ নভেম্বর ২০২৪
এজি

Share