আগামী ২০১৯ সালের শিক্ষাবর্ষের জন্যে বিনামূল্যের ৩৬ কোটি ৬ লাখ বই ছাপানো হবে। ইতোমধ্যে ছাপার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগামী এপ্রিল ২০১৮ থেকে শুরু হবে ছাপার কাজ। ২০১৮ সালের অক্টোবরের মধ্যে সব বই ছাপা শেষে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া হবে। নির্বাচনি বছর হওয়ায় কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চায় না সরকার। যে কারণে আগে থেকে বই ছাপার সব ধরনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।
বুধবার (৭ মার্চ) শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এনসিটিবির কর্মকর্তাদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে বই ছাপার বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন।
সূত্র মতে শিক্ষামন্ত্রী এনসিটিবির কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন,‘এবার নির্বাচনি বছর। অক্টোবরের মধ্যেই বই ছাপা শেষ করতে হবে। পরে ঝামেলা হতে পারে। বইয়ের ছাপার মানে কোনো ছাড় দেয়া চলবে না। কোনো প্রেস যদি দু’নম্বরি করে তাহলে ছাপা বন্ধ করে দিবেন। প্রয়োজনে একটা দু’টা প্রেসের বই নিবো না। তাদের বই না হলেও ১ জানুয়ারি ২০১৯ পাঠ্যপুস্তক উৎসব করতে কোনো সমস্যা হবে না।’
এনসিটিবির সূত্র জানায়,‘২০১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির, প্রাথমিক বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন, মাধ্যমিক বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন, ইবতেদায়ি ও দাখিল,কারিগরি, এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্যে ব্রেইল বই, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নির্দেশিকা ছাপানো হবে।
চলতি শিক্ষাবর্ষের মতো ২০১৯ শিক্ষাবর্ষেও নবম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান, পদার্থ, রসায়ন ও জীব বিজ্ঞান এ চারটি বই পুরো রঙিন করে ছাপানো হবে।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ( ৮ মার্চ ) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর মাধ্যমিক স্তরের বইয়ের চাহিদা জমা দিয়েছে।তাদের চাহিদা অনুযায়ী- মাধ্যমিক (বাংলা ভার্সন) ১ কোটি ২৪ লাখ ৭ হাজার ৬ শ’৮ জন শিক্ষার্থীর জন্যে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩শ’৬১টি।
মাধ্যমিক (ইংরেজি ভার্সন) ৭৬ হাজার ৮শ’৩ জন শিক্ষার্থীর জন্যে ১১ লাখ ২ হাজার ১শ’৯০টি। ইবতেদায়িতে ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯শ’৮৪ জন শিক্ষার্থীর জন্যে ২ কোটি ২৫ লাখ ৩১ হাজার ৭শ’৮০টি।
দাখিলের ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯শ’৮৪ জনের জন্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৯৮ হাজার ৫শ’৬১টি। এসএসসি ভোকেশনালের ২ লাখ ৩৯ হাজার ১২ জনের জন্যে ৩১ লাখ ৩১ হাজার ৯শ’১৫টি।
দাখিল ভোকেশনাল ১০ হাজার ৯৫ জনের জন্যে ১ লাখ ৪০ হাজার ৪শ’৯৫টি। ট্রেডের ২ লাখ ৩১ হাজার ৩শ’১৩ জনের জন্যে ১২ লাখ ২১ হাজার ৮শ’২২টি। মাধ্যমিক স্তরের ১ কোটি ৮৭ লাখ ১৬ হাজার ১শ’১৮ জন শিক্ষার্থীর জন্যে ২৪ কোটি ৫৮ লাখ ৪৮ হাজার ১শ’৫৩টি বই ছাপানো হবে।
প্রাথমিক স্তরে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিকে ৬৮ লাখ ৬৩ হাজার ৪৮টি এবং প্রাথমিকে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ৪ হাজার ১শ’১০টি বই ছাপানো হবে। অন্ধদের জন্যে ৮ হাজার ৯শ’৫টি বই ছাপানো হবে।
এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো.ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ ) মাধ্যমিক স্তরের বইয়ের চাহিদা মাউশি থেকে পেয়েছি। এখন চাহিদা যাচাই-বাছাই চলছে। সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে অন্ধদের ব্রেইল বইয়ের চাহিদাও পেয়েছি।এবার অন্ধদের বইয়ের সঙ্গে মাল্টিমিডিয়া টাচ বুকও (সিডি আকারে) দেয়া হবে। তারা টাচ করলেই মিউজিকের মতো বেজে উঠবে।’
২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ৪ কোটি ২১ লাখ শিক্ষার্থীর মাঝে ৩৬ কোটি ২১ লাখ বই বিতরণ করা হবে। এরমধ্যে প্রাথমিক স্তরের ২ কোটি ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩শ’৬৬ জন শিক্ষার্থীর ৩৩টি বিষয়ের ১০ কোটি ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১টি বই ছাপানো হবে।
মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) স্তরের ১ কোটি ২৭ লাখ ৪৫ হাজার ৯৩ জন শিক্ষার্থীর ১শ’১৪টি বিষয়ের ১৭ কোটি ৮৯ লাখ ২৩ হাজার ৭শ’৩৩টি বই ছাপানো হবে। ইবতেদায়ি ও দাখিল ৫৪ লাখ ৩ হাজার ৪শ’৬৯ জন শিক্ষার্থীর ১শ’২৪টি বিষয়ের ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮শ’২৯টি বই ছাপানো হবে।’
এনসিটিবির সদস্য প্রফেসর ড.মিয়া ইনামুল হক রতন সিদ্দিকী বলেন,‘টেন্ডারের সকল প্রক্রিয়া শেষ করে এপ্রিল মাসের মধ্যে বই ছাপার কাজ শুরু করা হবে। অক্টোবরের মধ্যে শত ভাগ বই ছাপা শেষ করবো বলে আশা করছি। (মানবজমিন)
বার্তা কক্ষ
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭ : ০০ পিএম, ৮ মার্চ ২০১৮,বৃহস্পতিবার
এজি