রাজনীতি

২০১৯-এ বাণিজ্যিকভাবে চলবে মেট্টোরেল : ওবায়দুল কাদের

খুব দ্রুতই মেট্রোরেল প্রকল্পের প্যাকেজ-১-এর আওতায় ডিপো নির্মাণের কাজ অনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কাজের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে প্রকল্পের লেক-৯-এর ডিওয়াটারিং কার্যক্রম শুরু করা হবে। আশা করা হচ্ছে, আরলি কমিশনিং হিসেবে আগামী ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মেট্টোরেলের বাণিজ্যিক পরিচালনা শুরু হবে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর উত্তরা মেট্রোরেল ডিপো এলাকা পরিদর্শনকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ”ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্যানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বা ডিএমআরটিডিপি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রজেক্ট।”

মন্ত্রী বলেন, ”আমরা সাধারণ মানুষদের স্বপ্ন দেখাব না। স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব।” পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতি খুব ভালো বলে দাবি করেন মন্ত্রী। ”জনগণ যাতে অল্প খরচে মেট্রোরেলের মাধ্যমে যাতায়াত করতে পারে এবং যানজট দূর হয়, সে জন্য আমরা মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা আগামী মাসের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেল ডিপো নির্মাণকাজের শুভ উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ সম্পর্কে একটি সামারি পাঠানো হয়েছে। তিনি সময় দিলেই উদ্বোধনের দিন ঠিক করা হবে”, বলেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালে মেট্রোরেল প্রকল্প চালু হওয়ার কথা ছিল। সেখানে ৫ বছর কমিয়ে আনা হয়েছে, যা আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। প্রথম অবস্থায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মেট্রোরেলের কোনো শব্দ হবে না বলেও দাবি মন্ত্রীর।
উত্তরা হাউস বিল্ডিং মাসকট প্লাজার সামনে দিয়ে সোনারগাঁও জনপথ সড়কের শেষপ্রান্তে দিয়াবাড়ি বাজারসংলগ্ন উত্তরা তৃতীয় পর্যায়ে মেট্রোরেল ডিপো এলাকা।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা)। জাইকারও অনুমোদন পাওয়া গেছে। গত এপ্রিল মাসে ডিপোর মাটি উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে।

মোট ৮ প্যাকেজের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো প্যাকেজ-১ এর আওতায় ডিপো এলাকার ভূমি উন্নয়ন ও পূর্ত কাজ সম্পন্ন করা।

গত ৭ জানুয়ারি রাজউক থেকে ২৪ হেক্টর বা ৫৯ একর জমি পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। ডিপোর স্ট্যাবলিং ইয়ার্ড বা বিরতিতে ট্রেন রাখার স্থান, ট্রেন মেরামত ও ওভারহলের মালামালের গুদামঘর, ট্রেন মেরামত ও ওভারহল স্থান, প্রধান ওয়ার্কশপ, অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার, ট্রেন ইন্সপেকশন, জেনারেটন এবং ইলেকট্রিক্যাল ভবন, ট্রেন ওয়াশ স্থাপনা, বগুতল বিশিষ্ট কার পার্কিং, গ্রিন স্পেস স্থাপনা নির্মাণ করা হবে।

প্যাকেজ-১-এর আওতায় সেন্ড কম্প্যাকশন পাইল বা এসসিপি দ্বারা প্রায় ২৫ একর ও ডাইনামিক কম্প্যাকশন বা ডিসি দ্বারা প্রায় সাড়ে ৩৬ একর ভূমির গ্রাউন্ড ইম্প্রুভমেন্ট কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন মেট্রোরেল প্রকল্পের পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন। তিনি বলেছেন, গত মার্চ মাসে টোকিও কন্সট্রাকশন লিমিটেডের সঙ্গে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ প্রায় ৫৬৭ কোটি টাকার ক্রয়চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এসসিপি দ্বারা আগামী জুলাই মাস থেকে শুরু হয়ে আগামী বছর শেষ হবে এবং ডিসি কাজ আগামী ডিসেম্বর থেকে শুরু করে আগামী ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হবে। গত ২৭ এপ্রিল ডিপো নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। তবে ডিপো এলাকায় মাটি উন্নয়ন কাজে মাটির গুণগত মান ভালো নয় জেনেও এই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করায় মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে। তবে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) বলছে, মাটির সক্ষমতা তৈরি করেই ডিপোর মাটি উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট ৫:৪৫ পিএম, ১৩মে ২০১৬, শুক্রবার

এইউ

Share