জাতীয়

চলতি বছরেই দেশ থেকে মোবাইল সন্ত্রাসের বিদায়

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করতে সন্ত্রাসীরা আধুনিক প্রযুক্তি তথা মোবাইল ফোনকে বেশি ব্যবহার করছে।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটেছে। ফলে অনেক নিরীহ মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। সবচেয়ে ভীতিকর ব্যাপার হচ্ছে সন্ত্রাসীরা তাদের কার্যকলাপ পরিচালনার জন্য অননুমোদিত ফোন ব্যবহার করছে।

অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের মত ছোট দেশগুলোতেও ফোনগুলোকে ট্র্যাক করা সম্ভব হচ্ছে না বলে সমস্যা কমার বদলে বাড়ছে। ১৬ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে প্রচুর পরিমাণ অবৈধ ফোনের কারণেই সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। যে কারণে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দেশের প্রতিটি সিম ২০১৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে নিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ ও ডাক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসীরা অনিবন্ধিত সিম ও অননুমোদিত ফোন ব্যবহার করে ঢাকায় ইতালীয় নাগরিক হত্যার মত বিভিন্ন ধরণের অপরাধ করছে। আমরা সবাই জানি যে, সিজার হত্যাকাণ্ডে একটি অননুমোদিত ফোন ব্যবহৃত হয়েছিল, যা বর্তমানে অপরাধী শনাক্তকরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই সমস্ত অবৈধ হ্যান্ডসেট বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের দেশের বাজারে প্রবেশ করছে। এদের মধ্যে কোনো কোনোটির আইএমইআই নকল আবার কোনোটির আইএমইআই নম্বরই নেই। আবার কোনো কোনো ফোন বিটিআরসিতে নিবন্ধিত নয়। এর ফলে হ্যান্ডসেট চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনাও বৃদ্ধি পায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই সমস্ত অবৈধ আইএমইআই অথবা নিবন্ধনহীন আইএমইআইযুক্ত হ্যান্ডসেট ট্র্যাক করতে পারে না। অপরাধীরা বৈধ এবং চুরি করা হ্যান্ডসেটের পাশাপাশি এই সমস্ত অবৈধ এবং কালোবাজারি হ্যান্ডসেট ব্যবহার করে তাদের অপরাধ কার্যক্রম চালায়।

তারানা বলেন, সিম নিবন্ধনের মতো হ্যান্ডসেটের জন্যও একই রকম ব্যবস্থা নেবার কথা বলা হচ্ছে, সেটা সম্ভব হলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ট্র্যাক করা সম্ভব হবে। নিবন্ধিত আইএমইআই নম্বরসমূহের একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেস থাকবে যেন অবৈধ অথবা নকল আইএমইআই নম্বর চিহ্নিত করা যায়। তবে এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি ২০১৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মোবাইল সন্ত্রাসকে বিদায় করা হবে।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার এম আর সিদ্দিকী বলেন, অবৈধ এবং কালোবাজারির হ্যান্ডসেট ব্যবহার অবৈধ ইমপোর্ট একটি বড় সমস্যা। অবৈধ এবং কালোবাজারি দমাতে রিট এবং ইনজাংশনের মতো আইনগত পদক্ষেপের প্রয়োজন।

আইনগত বাধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবৈধ হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করার মতো তেমন কোনো আইন নেই। যে কারণে অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে না।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, অবৈধ ফোনের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করার চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিটিআরসিতে আলাদা একটি মোবাইল বিভাগ স্থাপনের চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে একমত পোষণ করে ড. মাহমুদ বলেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছ থেকে সহযোগিতা লাগবে। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৬ সালের মার্চ এর মধ্যে সিম রেজিস্ট্রেশন শেষ হবার পর হ্যান্ডসেট রেজিস্ট্রেশন শুরু করা হবে।

এর মাধ্যমে মোবাইল সন্ত্রাস অনেকাংশে কমে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ড. শাহজাহান মাহমুদ।

নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট : ০৭:০০ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৫, শনিবার
ডিএইচ

Share