ভরা মৌসুমে যা পাওয়া যায়নি তা মিলছে এখন, বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রচুর বড়, মাঝারি ও ছোট ইলিশ। দামও মৌসুমের চেয়ে বেশ কম। চার থেকে পাঁচটিতে এক কেজি ওজন হবে এমন ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০০ টাকার কাছাকাছি দরে। মাঝারি ইলিশ প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকার কাছাকাছি, ওজন হবে আধা কেজির মধ্যে। আর বড় ইলিশ প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকার কাছাকাছি। ওজন হবে এক কেজির মধ্যে। অথচ মৌসুমে এক কেজি আকারের ইলিশ কিনতে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা গুণতে হয়েছে।
জানা যায়, ইলিশ সবচেয়ে বেশি ধরা পড়ে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। কিন্তু এ বছর ভরা মৌসুমেও ছোট ও মাঝারি ইলিশ খুব বেশি ধরা পড়েনি। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষকে ইলিশ বঞ্চিত থাকতে হয়েছে। অসময় হলেও তাদের সাধ পূরণের সময় এসেছে জানুয়ারির মাঝামাঝিতে। গত ১০ বছরেও ডিসেম্বরের শেষ ও জানুয়ারিতে এত বেশি ইলিশ ধরা পড়েনি। কারণ শীতের মৌসুমে উপকূলে সাধারণত ইলিশ মাছ তেমন পাওয়া যায় না, প্রচলিত এই ধারণা দীর্ঘদিনের। তবে এবার যেন তার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে বাজারে উল্লেখযোগ্য হারে ইলিশের দেখা পাওয়া যাচ্ছে।
রায়পুর উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে সংরক্ষণের নানা ব্যবস্থার কারণে ইলিশ সুষম হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ এখন সারা বছরই কমবেশি মাছ মিলছে। তাদের মতে, বছরের কোনো কোনো সময় তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত ও জলদস্যুতার কারণে ধরতে না পারলে ইলিশের সরবরাহ কমবেশি হতে পারে। তবে সার্বিকভাবে পুরো বছরই এ মাছ পাওয়া যাবে বলে দাবি করেন কর্মকর্তারা।
চরবংশী আলতাফ মাস্টার মাছঘাটের ইলিশ ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, এ সময় অন্য বছর কোনো ইলিশই দেখা যেত না। কিন্তু এবারই ব্যতিক্রম। তাই শীতকালেও বেশ কিছুদিন ধরেই এখানে প্রচুর ইলিশ আসছে। এই মাছঘাটে ইলিশের কমতি নেই। প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২০০ থেকে ৩০০ মণ ইলিশ আসছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ইলিশই এক কেজি ওজনের, যার দাম কেজি মাত্র ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। এর চেয়ে ছোট আকারের বা বড় আকারের ইলিশ ১০০ থেকে ২০০ টাকা কম-বেশিতে কেনা-বেচা হচ্ছে। স্থানীয় ক্রেতাদের ইলিশের চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ সারা দেশের বাজারগুলোতে এই ইলিশ যাচ্ছে।
রায়পুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ থাকাসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে নদী ও সাগরে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। এছাড়াও মা ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম দেয়ায় জেলেদের জালে বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে। এখন সারা বছরই ইলিশ ধরা পড়বে নদী ও সাগরে। সরকারের সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে প্রতিবছর উৎপাদনও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বার্তা কক্ষ,৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০