শিক্ষাঙ্গন

১৮ বছরেও এমপিও পায়নি কোয়া-চাঁদপুর ইসলামিয়া মাদরাসা

দীর্ঘ ১৮ বছরেও এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় খুড়িয়ে চলছে কচুয়া পৌরসভার কোয়া-চাঁদপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রম।
প্রতি বছর দাখিল, জেডিসি ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগসহ সন্তোষজন ফলাফল অর্জন করে আসছে প্রতিষ্ঠনটি।

এমন ইশর্^নীয় সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় স্বচ্চলতা হারিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর।
তবে হাল না ছেড়ে এমপিওভুক্ত করণের স্বপ্নে আজও চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি।

২০০০ সালের ১ জানুয়ারী স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষা অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের সাবেক উপ-পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোঃ আমিনুল হক মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি পড়া-লেখায় সন্তোষজন ফলাফল অর্জন করে স্থানীয়দের নজর কাড়তে সক্ষম হয়।

পৌর এলাকায় প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রায় ৫০ শতক ভূমি থাকলেও ক্লাস চলার মতো নেই পর্যাপ্ত একাডেমিক ভবন। প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প সংখ্যক শিক্ষক দিয়েই চলছে পাঠদান। শিক্ষার্থীদের জন্যে সৌচাগারসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

এ বিষয়ে বিভিন্ন দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সুপার মোঃ ইয়াকুব আলী চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘শুরু থেকেই আমি ও অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীগণ অত্র প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছি।

বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমাদের দুঃখ কষ্ট দেখার যেন কেউ নেই। মাদরাসাটিতে বর্তমানে ১৩জন শিক্ষক, ৩ কর্মচারী ও প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্যে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকায় বাধ্য হয়ে কখনো বারান্দায়, কখনো বা খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে হয়। বিশেষ করে মাদরাসাটি এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক, কর্মচারীদের ধরে রাখা কষ্ট হচ্ছে।’

মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোঃ জামাল হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত করা এখন সময়ের দাবী। আমার জানামতে, এ প্রতিষ্ঠানটি প্রায় প্রতিবছর সন্তোষজনক ফলাফল উপহার দিয়ে আসছে।’

তিনি আরো জানান, ‘২০১৭ সালের ২৮ জানুয়ারী মাদরাসা মাঠে আমাদের প্রিয় নেতা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপিকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ অনুষ্ঠানে এলাকাবাসী মাদরাসাটিকে এমপিওভুক্তকরণ ও একাডেমিক ভবন নির্মানের জোর দাবী জানান।

এলাকাবাসির দাবির প্রেক্ষিতে ঐ সময়ে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি মহদয় ভবন নির্মান সহায়তায় ১০ লক্ষ টাকা অনুদানের প্রতিশ্রæতি দেন। এই প্রতিশ্রুতিতে গত বছর খানেক যাবৎ প্রায় কোটি টাকা ব্যায়ে ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মানের কাজ শুরু হয়।

ভবনটি বর্তমানে ফাউন্ডেশন শেষ হয়ে ভিটা লেভেলের কাজ প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। চলমান কাজ এগিয়ে নিতে ধার-দেনা করে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার কাজ করা হয়েছে।

বর্তমানে অর্থ সংকটে ভবন নির্মান কাজ এগিয়ে নেয়া যাচ্ছে না। ভবন নির্মান কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ধর্নাঢ্য ব্যক্তি, শিক্ষানুরাগী ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছে সচেতন এলাকাবাসী।’

প্রতিবেদক : জিসান আহমেদ নান্নু

Share