শিক্ষাঙ্গন

১৬ বছর পর পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে চায় ফরিদগঞ্জ দক্ষিণের ভোটারগণ

ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নে ১৬ বছর পর ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন । নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটারের মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষার আনন্দ যেমন রয়েছে,তেমনি রয়েছে ভোট দিতে পারবে কিনা এ নিয়ে অজানা আতঙ্কসহ নানা সংশয়।

ভোটারগণ বলেন ,‘নির্বাচনের পর যাতে কোনো রোষানলে পড়তে না হয় সেজন্যে অনেক ভোটর তার ভোটের প্রশ্নে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ। তবে ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নে ১৬ বছর পর ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করতে চায় ভোটারগণ।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ভোটার বলছে,‘ ১৬ বছর পর ভোটারগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারবো তো? নাকি ক্ষমতার প্রভাবে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত নির্বাচনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আবারো আরেকটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করা হয় ? এমন নানা প্রশ্ন উঠছে স্বয়ং প্রার্থী ছাড়াও সাধারণ ভোটারসহ বিভিন্ন মহল থেকে।’

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানায়,ওই ইউনিয়নে এবার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন ৫ জন। ৯ টি মেম্বার পদে পুরুষ প্রার্থী রয়েছে ৪১ জন । সংরক্ষিত ৩টি মহিলা মেম্বার পদে মহিলা প্রার্থী হয়েছে ৯ জন। ভোটার রয়েছ ১৭ হাজার ৬৩০ ভোট। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৮৯৬ জন। মহিলা ভোটার ৮ হাজার ৭৩৪ জন। ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা রয়েছে ৯টি। আগামি ২৫ জুলাই নির্বাচন করার জন্যে প্রস্তুতি রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের।

এ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে এবার বিএনপি কোনো প্রার্থী দেয়নি। চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছে ৫ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রয়েছে সাইফুল আলম সোহেল খান (নৌকা)। বাকি ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থী যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন তারা হচ্ছেন : আলমগীর হোসেন রিপন (আনারস), আকবর পাটওয়ারী (চশমা), শফিকুর রহমান (মোটরসাইকেল) ও রেজাউল ইসলাম (টেলিফোন)।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ চেয়ারম্যান প্রার্থী সবাই সরকার দলীয়। এদের মধ্যে একমাত্র সাইফুল ইসলাম সোহেল খান (নৌকা) ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য হিসেবে দীর্ঘ বছর জনসেবার দায়িত্ব পালন করেছেন। অপরদিকে আলমগীর হোসেন রিপন ইতিপূর্বে দীর্ঘ বছর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ছিলেন। সরকার দলীয় নেতা হিসেবে থাকার সুবাদে আলমগীর হোসেন রিপন (আনারস)-এর ছাত্র ও যুবসমাজের মধ্যে রয়েছে তাঁর শক্ত অবস্থান। বাকি ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ কিংবা এর কোনো সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী না হলেও এরা সরকার দলীয় সমর্থক বটে।

নির্বাচনি এলাকায় গিয়ে কথা হয় প্রার্থী, ভোটার ও সাধারণ জনগণের সাথে। বিএনপির প্রার্থী না থাকলেও বিএনপির ভোটাদের দাবি, এ ইউনিয়নটি বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। এখানে যদি অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট হয় তাহলে যে প্রার্থী বিএনপির ভোটারদের ভোট নিতে পারেন তাহলে ঐ প্রার্থীর জয় সুনিশ্চিত বলে মনে করছেন অনেকেই। অনেকেই বলছেন,যদি অবাধ সুষ্ঠ ভোট হয়,তাহলে বিএনপির ভোটারদের ভোটের উপরই নির্ভর করে প্রার্থীর জয়-পরাজয়।

এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সোহেল খানের জয় নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রায় প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলা থেকে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা ওই ইউনিয়নে গণসংযোগের পাশাপাশি নির্বাচনি সভা করে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। উক্ত ইউপির সাবেক স্বনামধন্য চেয়ারম্যান মরহুম নূর মোহাম্মদের ছেলে আলমগীর হোসেন রিপন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার প্রয়াত বাবার আদর্শের স্মৃতিচারণ করে নির্বাচনী প্রতীক আনারসের জয় নিশ্চিত করতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আকবর পাটওয়ারী তার নির্বাচনি প্রতীক চশমার জয় নিশ্চিত করতে ভোটারগণের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট খুজেছেন। বাকি স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী সফিকুল ইসলাম ও রেজাউল ইসলামকে নির্বাচনি প্রচারে দেখা যায় না। তবে পুরুষ ও মহিলা মেম্বাররা দলবল নিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে তাদের নির্বাচনি প্রচার অব্যাহত রেখেছেন।

মো.শিমুল হাছান
২০ জুলাই ২০১৯
এজি

Attachments area

Share