Wednesday, 01 July, 2015 01:22:57 PM
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
খারাপ আত্মা তাড়ানোর নাম করে এক ব্যক্তিকে পনের বছর ধরে লোহার শেকলে বেঁধে রেখেছিল তার পরিবার। কিন্তু মঙ্গলবার পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন তাকে শেকলমুক্ত করেছে। এটি ভারতের গুজরাট রাজ্যের দোদানাভতা গ্রামের ঘটনা।
ত্রিশ বছর বয়সী রামেশভাই দামারকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিল তার পরিবারের লোকজন। এক দিন দুদিন নয়- দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে চলছিল দামারের শেকলবদ্ধ জীবন। তাকে লোহার শেকল দিয়ে বেঁধে নোংরা কুঁড়েঘরের এক কোণে ফেলে রাখা হয়েছিল। স্রেফ একটি কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে তারা তার ওপর এতটা নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছিল। তারা মনে করেছিল, রমেশের ওপর খারাপ আত্মা ভর করেছে।
সম্প্রতি এ ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর মঙ্গলবার পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন তাকে উদ্ধার করেছে। তবে তার পরিবার বলছে, তারা বাধ্য হয়েই তাকে এভাবে বেঁধে রেখেছিল। তাকে ছেড়ে দিলেই সে আশপাশের মানুষজনকে পাথর ছুড়ে মারতো।
রমেশের পরিবার আরো জানিয়েছে, একদিন ভাই সোম্বাইয়ের সঙ্গে মিলে বাড়ির কাছের এক বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়েছিল। বাড়ি ফেরার পর থেকেই সে অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে। পরে এক ওঝাকে দিয়ে তার চিকিৎসা করানো হয়। ওই ওঝাই তাদের জানান, রমেশের ওপর এক খারাপ আত্মা ভর করেছে। তারই পরামর্শেই তারা তাকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখতে শুরু করে। যখন এই ঘটনা ঘটে তখন রমেশ পড়ত ক্লাস সিক্সে। অর্থাৎ মাঠে-ঘাটে ছুটোছুটি করে বেড়ানোর বয়সেই শেকলে আবদ্ধ হয় রমেশ। ওই অবস্থাতেই তাকে খাবার দাবার দেওয়া হতো। অবশ্য কিছুদিন তাকে স্থানীয় এক হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছিল। কিন্তু এতে তার অবস্থার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
মঙ্গলবার পুলিশ যখন তাকে উদ্ধার করে তখন সে নোংরা এবং বিবস্ত্র অবস্থায় ছিল। এমনকি হাঁটতেও পারছিল না। পরে তাকে গোসল করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। এরপর তাকে তোলা হয় স্থানীয় বাকোর আদালতে। আদালত তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা যায়। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
চাঁদপুর টাইমস : ডেস্ক/ডিএইচ/২০১৫।