১৫ ফ্লাইট বাতিল, বিপাকে ৬ হাজার হজযাত্রী

বেশি লাভের আশায় হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া করতে দেরি করছে এজেন্সিগুলো। বাড়ি ভাড়া না হওয়ায় এখনো ২০ হাজার হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। তাই বিমানের টিকিটও কিনতে পারছে না এজেন্সিগুলো। আবার বিমানের টিকিট বিক্রি না হওয়ায় এ পর্যন্ত ১৫টি হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

এতে বিপাকে পড়েছেন এসব ফ্লাইটের ছয় হাজারের বেশি হজযাত্রী।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন বাংলাদেশি হজ করতে সৌদি আরবে যাবেন। তাঁদের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক লাখ দুই হাজার হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। ২০ হাজারের বেশি হজযাত্রীর ভিসা এখনো হয়নি।

আবার হজ এজেন্সিগুলো বিমান টিকিট না কেনায় আজ শুক্রবার রাত পর্যন্ত ১৫টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১০টি এবং সৌদিয়া এয়ারলাইনসের পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

গত ২১ মে থেকে শুরু হয়েছে হজ ফ্লাইট। এরপর ২০২৩ সালের হজ ফ্লাইটের তথ্য হজ পোর্টালে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

এ নিয়ে কালের কণ্ঠে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর গত ৭ মে থেকে ফ্লাইটের তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হচ্ছে। 

ঢাকা হজ অফিসের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতিটি ফ্লাইটে ৪১৯ জন করে যাত্রী পরিবহনের কথা ছিল। কিন্তু অনেক ফ্লাইটে ১০০ থেকে ১৫০, আবার কিছু ফ্লাইটে মাত্র পাঁচ থেকে ছয়জন যাত্রী ছিলেন। হজ এজেন্সিগুলো হজযাত্রীদের বিমান টিকিট না করায় ১৫টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। তবে যেসব হজযাত্রীর টিকিট হওয়ার পর যাত্রা বাতিল করা হয়েছে, তাঁরা চরম কষ্টের মধ্যে আছেন।

কর্মকর্তারা বলেন, প্রায় ১০০ হজযাত্রী আশকোনার আশপাশে বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছেন। তাঁদের ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় গ্রামের বাড়িতেও ফিরে যেতে পারছেন না, আবার সৌদি আরবে হজেও যেতে পারছেন না।

জানা যায়, এই ১৫টি ফ্লাইটে ছয় হাজার ২৮৫ জন হজযাত্রী যথাসময়ে সৌদি আরবে পৌঁছাতে পারেননি। এখন এসব হজযাত্রীর জন্য নতুন ফ্লাইট লাগবে। সৌদি সরকার কোনো কারণে নতুন ফ্লাইটের অনুমোদন না দিলে এসব যাত্রীর হজে যাওয়া কঠিন হতে পারে। কারণ, আগামী ২২ জুন থেকে সব ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় এক সপ্তাহ আগে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ে নতুন ২০টি ফ্লাইটের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছি। আশা করি দ্রুত এসব স্লটের অনুমোদন পাব। কারণ, হজযাত্রী যেতে না পারলে আমাদের শুধু বদনাম হবে।’

ঢাকার আশকোনা হজ ক্যাম্পের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাকি ২০ হাজার হজযাত্রীর ভিসা আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে হয়ে যাবে। হজযাত্রীদের ভিসা ও বিমান টিকিট দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে কয়েক দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেসব হজ এজেন্সি যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশনের (হাব) সভাপতি এম শাহদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর ভিসা নিয়ে এখন আর কোনো ক্রাইসিস নেই।’

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। গত ২১ মে থেকে শুরু হয়েছে হজ ফ্লাইট। এরই মধ্যে ৬২ হাজার ২০৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।

টাইমস ডেস্ক/৯ জুন ২০২৩

Share