আন্তর্জাতিক

১৫ দিন ধর্ষণ শেষে গুলি : নিষ্ঠুর শারীরিক নির্যাতনের পরও বেঁচে আছে মেয়েটি!

টানা ১৫ দিন ধর্ষণ শেষে পর পর দুইবার তাকে গুলি করা হয়। এরপর পরিত্যক্ত কুয়োয় তাকে ফেলে পালিয়ে যায় ধর্ষকেদর দল।তীব্র ইচ্ছাশক্তির জোরে বেঁচে ফেরে কিশোরী।

২২ নভেম্বর বিকেল ৫টা নাগাদ মোবাইল ফোনের সিমকার্ড কিনতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল পশ্চিম দিল্লির বাসিন্দা বছর পনেরোর মেয়েটি। দোকানে যাওয়ার পথে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রেটার নয়ডার এক পরিত্যক্ত খামারবাড়িতে। সেখানে টানা ১৫ দিন ধরে তাকে ধর্ষণ করে এক যুবক ও দুই নাবালক। গত শনিবার রাতে খামার থেকে তাকে গাড়িতে চড়িয়ে নিয়ে আসা হয় শস্যখেতের মাঝে। সেখানে দুষ্কৃতীরা খুব কাছে থেকে কিশোরীকে পর পর দুইবার পিস্তল থেকে গুলি করে। তারপর মাঠের মাঝে ৩০ ফিট গভীর শুকনো কুয়োর ভিতর তাকে ঠেলে ফেলে দেয়।

অপরাধীরা মনে করেছিল, কিশোরীর বাঁচার আশা নেই। সেই কারণে তাকে কুয়োয় ফেলে দেওয়ার পর এলাকা ছেড়ে তারা পালায়। কিন্তু প্রবল মনের জোরে বেঁচে যায় নিগৃহীতা। দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর সাহায্য চেয়ে সে চেঁচাতে থাকে। কিন্তু সারা রাত চিত্কার করলেও কেউ সাড়া দেয়নি। দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষীণ হতে থাকে তার কন্ঠস্বর। অবশেষে তা শুনতে পান স্থানীয় তুঘলকপুর গ্রামের এক তরুণ। জমির মালিক ধীরা ভাটির ছেলে বাব্বল ভাটিকে তিনি খবর দেন। এর পর গ্রামবাসীরা কুয়ো থেকে দড়ির সাহায্যে উদ্ধার করেন কিশোরীকে। প্রবল শীতে সারা রাত গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৩০ ফিট নীচে পড়ে থাকার পরও বেঁচে রয়েছে সে। তাকে মোটরবাইকে চাপিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গেছে, তার অবস্থা সঙ্কটজনক।

তবে জ্ঞান হারানোর আগে পুলিশের কাছে গোটা ঘটনার বিস্তারিত বিবৃতি দিয়েছে সে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মূল ধর্ষক কৃষাণ ও তার দুই নাবালক শাগরেদকে। জানা যায়, কয়েক মাস আগে কাকার দোকানে কৃষাণের সঙ্গে আলাপ হয় নিগৃহীতার। ২২ নভেম্বর বিকেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার সঙ্গে দেখা হয় ওই কিশোরীর। সেই সময় তাকে অভিযুক্তর সঙ্গে একটি গাড়িতে উঠতে দেখে কিশোরীর ভাই। এরপর বেশ কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ঘরে না ফিরলে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করে কিশোরীর পরিবার।

কিশোরীর বক্তব্য অনুযায়ী, গাড়িতে জোর করে তাকে ঢোকানো হয়। ভিতরে অভিযুক্ত দুই নাবালক আগেই বসেছিল। এরপর দিল্লি ছেড়ে গ্রেটার নয়ডা পাড়ি দেয় তারা। শেষ পর্যন্ত সালেমপুর গুর্জর গ্রামের এক পোড়ো খামারবাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে কৃষাণ ও তার দুই সঙ্গী। তারপর তাকে ঘরবন্দি করে রেখে তারা চলে যায়। সারাদিন সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও পরিত্যক্ত খামারবাড়িতে সেই ডাকে সাড়া দেওয়ার কেউ ছিল না। খবর-এবিপি’র।

এইভাবে নাগাড়ে ১৫ দিন তার উপর চরম শারীরিক নিগ্রহ চালায় তিন দুষ্কৃতিকারী। গত ৫ ডিসেম্বর রাতে ফের ওই মেয়েটিকে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ৩০ কিমি দূরে তুঘলকপুর গ্রামের শস্যখেতে। সেখানে দুষ্কৃতীরা মদ্যপানে ব্যস্ত হয়ে পড়লে পালানোর চেষ্টা করে কিশোরী। কিন্তু ধরা পড়ে য়ায়। ক্ষুব্ধ কৃষাণ তাকে খুব কাছে থেকে .১২ বোরের পিস্তল দিয়ে পর পর দু’বার গুলি করে। একটি গুলি বুকে ও অন্যটি তার পেটে লাগলে লুটিয়ে পড়ে মেয়েটি। সে মারা গিয়েছে মনে করে তিন দুষ্কৃতী তাকে খেতের মাজের শুকনো কুয়োয় ফেলে চম্পট দেয়।

গ্রেটার নয়ডা থানার ইনচার্ড লক্ষ্মী চৌহান জানিয়েছেন, ‘বুলেটে নিগৃহীতার শরীরের কোনও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ জখম হয়নি বলে সে বেঁচে গিয়েছে। পাশাপাশি শরীরের ভার হালকা হওয়ায় ৩০ ফিট নীচে পাথুরে মেঝেতে পড়েও প্রাণরক্ষা হয়েছে তার।’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার কিশোরীর দেহে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আপাতত তার অবস্থা সঙ্কটজনক।

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ১০:০৩ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার

এমআরআর  

Share